নিজস্ব চিত্র
সেপটিক ট্যাঙ্কে পড়ে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে দম আটকে মৃত্যু হল দুই ভাইয়ের। দু’জনকে বাঁচাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাকাও। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট থানার ধর্মতলা এলাকায়। মৃতদের নাম শুকতারা সেখ (২১) ও সামাদ সেখ (২৫)। ধর্মতলা গ্রামেই তাঁদের বাড়ি। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেপটিক ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে দম আটকেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। একই দিনে দুই সন্তানের অকাল মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়েছেন মৃতদের পরিবার পরিজনরা।
পূর্বস্থলী ১নম্বর ব্লকের বগপুর পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম ধর্মতলা। এই গ্রামেরই বাসিন্দা মোক্তার সেখ। সোমবার তাঁর বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে সমস্যা দেখা দেয়। বেলা ১১ টা নাগাদ সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলে পাইপ লাইন লাগানোর কাজ শুরু করে তাঁর দুই ছেলে। কাজ করার সময়ে আচমকাই সামাদ সেপটিক ট্যাঙ্কে পড়ে যায়। দাদাকে বাঁচাতে গিয়ে ওই চেম্বারে মধ্যে পড়ে যায় ভাই শুকতারাও। তা দেখে দুই ভাইপোকে বাঁচাতে যান কাকা আমিরচাঁদ শেখ। তিনিও বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পাড়ার লোকজন সেখানে ছুটে যান ।
তাঁরা তিনজনকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন। অনেক চেষ্টা চালিয়ে তাঁরা আমিরচাঁদকে বাঁচাতে পারলেও বাঁচাতে পারেননি সামাদ ও শুকতারাকে। ঘটনার খবর পেয়ে নাদনঘাট থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাঁরা মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠান।
মৃতের কাকা আমিরচাঁদ সেখ বলেন, ‘‘দুটি সেপটিক ট্যাঙ্কের চেম্বারের ঢাকনা খোলার পর দেখা যায় একটি চেম্বারে জল নেই। ঠিক করতে পাইপ লাগাতে গিয়ে বড় ভাইপো চেম্বারে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে ছোট ভাইপোও চেম্বারের মধ্যে পড়ে যায়। আমি তাঁদের চেম্বার থেকে তোলার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যাই।’’ পরিবার সদস্যরা জানিয়েছেন,সামাদ রাজমিস্ত্রীর কাজ-সহ পাইপ লাইনের কাজ করত। স্থানীয় বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ত তাঁর ছোট ভাই শুকতারা। তাঁদের বাবা শারীরিক অসুস্থতার কারণে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। সামাদই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। দুই ছেলের মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পরিবার সদস্যরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy