ভাঙচুরের পরে। —নিজস্ব চিত্র।
পানশালায় কোন গান বাজবে, তা নিয়ে তর্ক বেধেছিল। নৃত্য প্রদর্শনের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও গানের সঙ্গে খাটো পোশাকের তরুণীর নাচও চলছিল বলে অভিযোগ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বুধবার রাতে ওই হট্টগোলের মধ্যেই এক জন নর্তকীর হাত ধরে টানতেই শুরু হয়ে যায় বচসা। গোড়ায় হাতাহাতি, তার পরে ভাঙচুর হয় দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের ওই পানশালায়। পাশে মাল্টিপ্লেক্সের একাংশেও ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ এসে ন’জনকে আটক করে। পানশালা কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানিয়েছেন, ওই পানশালায় নাচের অনুমতি নেই। তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সিটি সেন্টার ফাঁড়িকে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতেও বলেছেন তিনি।
সিটি সেন্টারের একটি বাণিজ্যিক বহুতলে কয়েক বছর ধরেই চলছে পানশালাটি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ গণ্ডগোল বাধে। এক দিকে অঙ্গদপুর থেকে আসা কয়েক জন, অন্য দিকে খনি এলাকার একটি দল। গান নিয়ে দু’পক্ষে তর্ক চলছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎই খনি এলাকা থেকে আসা দলটির এক জন এক নর্তকীর হাত ধরেন। অঙ্গদপুরের দলটি প্রতিবাদ করে। তা থেকেই বচসা থেকে হাতাহাতি বেধে যায়। সকলেই মত্ত ছিল। কয়েক জন ভাঙচুর শুরু করে। পানশালার রক্ষীরা সবাইকে বের করে দেন। তার পরেই কয়েক জন গিয়ে পাশে মাল্টিপ্লেক্সে ভাঙচুর চালায়।
পানশালার তরফে লিখিত অভিযোগে অবশ্য জানানো হয়েছে, কয়েক জন খদ্দের মদ্যপান করে টাকা না মেটানোয় গোল বাধে। চেপে ধরতেই তারা ভাঙচুর শুরু করে দেয় বলে অভিযোগ। এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মৃণালকান্তি দত্ত নামে অঙ্গদপুরের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পানশালার কর্ণধার জগজিৎ সিংহ দাবি করেন, পানশালায় শুধু গানের ব্যবস্থা আছে। নাচের কোনও ব্যবস্থা নেই। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, পানশালাটির কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠানো হবে। অনিয়ম ধরা পড়লে পানশালার অনুমোদন বাতিল করে দেওয়া হতে পারে বলে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ওই পানশালায় অশালীন নাচ হত। ২০১৩ সালের অগস্টে এই নিয়ে অশান্তির জেরে বেশ কিছু দিন বন্ধ ছিল পানশালাটি। অশালীন নাচ নিয়ে অভিযোগ তুলে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেয় তৃণমূলের মহিলা সেল। বৃহস্পতিবার একই অভিযোগে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘শাসকদলের কিছু নেতার প্রশ্রয়েই সিটি সেন্টারের মতো জনবহুল এলাকায় রাতের পর রাত অশালীন নাচগানের আসর চলছে।’’ দুর্গাপুরের মেয়র তথা বিধায়ক, তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘ওই পানশালায় অশালীন নাচ প্রদর্শনের অভিযোগ আমিও পেয়েছি। কিন্তু কোনও প্রমাণ হাতে আসেনি। পুলিশ-প্রশাসন উপযুক্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক। দলের কোনও স্থানীয় নেতার সঙ্গে পানশালার যোগসাজস থাকলে দল তাঁর পাশে থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy