জিআরও অফিসে বেহাল পড়ে নথিপত্র।
বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে পড়া জলে নষ্ট হচ্ছে নথিপত্র। উইধরা দেওয়ালের পাশে বসেই চলছে কাজকর্ম-- কালনা আদালতের হাল এমনই। সাধারণ বিচার প্রার্থী থেকে আইনজীবী, মুহুরি, টাইপিস্ট সকলেরই দাবি, চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
আদালত ঘুরে দেখা যায়, সাক্ষীদের জন্য বহু বছর আগে তৈরি হয়েছিল বসার জায়গা। কিন্তু র্দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বসার জায়গার শেড থেকে প্রায়শই খসে পড়ছে সিমেন্টের চাঙড়। শেডের বাইরেও গজিয়ে উঠেছে আগাছা। মহকুমা আদালতের প্রায় চার দশকের পুরনো মামলার নথিগুলি সংরক্ষিত আছে জিআরও অফিসে। কিন্তু বৃষ্টি পড়লেই অফিস ঘরের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে বলে অভিযোগ। ফলে নষ্ট হতে বসেছে বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি। অফিস ঘরের দেওয়ালে বাসা বেঁধেছে উইয়ের ঢিবি। পর্যাপ্ত আলো বাতাসহীন এই অফিস ঘরে বসেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জনা কয়েক কর্মচারী। জিআরও অফিসের ঠিক পাশেই রয়েছে পুলিশ লক আপ। কিন্তু জায়গার অভাবে এই লক আপে একসঙ্গে জনা দশেক অভিযুক্তকে রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে পুলিশের পক্ষে।
গোটা আদালত চত্বরে কোনও শৌচাগার নেই। এর ফলে প্রতিদিন সমস্যায় পড়েন প্রায় ৫টি ব্লক থেকে আসা হাজার খানেক মানুষ। শুধু তাই নয়, আদালত চত্বরে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থারও দেখা মিলল না। বসার উপযুক্ত জায়গা না থাকায় ত্রিপল খাটিয়েই আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলছেন। শুধু তাই নয়, বৃষ্টি পড়লে কাছাকাছি চা’য়ের দোকানে বসে থাকতে দেখা যায় আইনজীবী, মুহুরিদের।
সম্প্রতি কালনা আদালত পরিদর্শনে এসেছিলেন আইন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রর সাংসদ সুনীল কুমার মণ্ডল, বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু এবং মহকুমা শাসক সব্যসাচী ঘোষ। আইনজীবীরা চন্দ্রিমাদেবীর কাছে আদালত চত্বরের পরিকাঠামো উন্নতির দাবি জানান। পরে বার অ্যাসোসিয়েশনে একটি বৈঠক করেন আইন মন্ত্রী। সেখানেই তিনি পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য জেলা জজের মাধ্যমে উচ্চ-আদালতে একটি পরিকল্পনা পাঠাতে বলেন।
গাছ গজিয়েছে আইনজীবীদের বসার জায়গায়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে সামগ্রিক সংস্কারের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার একটি পরিকল্পনা পাঠানো দরকার। কালনা আদালতের আইনজীবী মলয় পাঁজা বলেন, “পরিকল্পনা তৈরির জন্য পুরসভার কাছে এক জন বিশেষজ্ঞ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।” পরিদর্শন চলাকালীন কালনার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান বিশ্বজিৎবাবু জানান, শৌচাগার ও পানীয় জলের কল তৈরির বিধায়ক তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। চন্দ্রিমাদেবী সুনীলবাবুকেও সাংসদ তহবিল থেকে পরিকাঠামো সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করার অনুরোধ করেন।
এখন দেখার মন্ত্রীর পরামর্শের পরেও আদালত চত্বরের হাল ফেরে কি না।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy