Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চেনা মুখকেই প্রার্থী করার দাবি কংগ্রেসের নিচুতলায়

ভোটযুদ্ধের ময়দানে ইতিমধ্যেই গা ঘামাতে শুরু করেছে তিন দল। বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে তৃণমূলের মমতাজ সঙ্ঘমিতা, সিপিএমের সাইদুল হক ও বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী প্রথম পর্বের প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রেও সিপিএমের ঈশ্বরচন্দ্র দাস প্রচার শুরু করেছেন। কর্মিসভা শুরু করেছেন তৃণমূলের সুনীল মণ্ডল, বিজেপির সন্তোষ রায়েরা। অথচ, কংগ্রেসে এখনও প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। ফলে, দেওয়াল লিখনও সে ভাবে শুরু হয়নি। কোথাও আবার দেওয়াল দখল করে প্রার্থীর নামের জায়গাটা ফাঁকাই রেখে দিতে হয়েছে কর্মীদের।

কাটোয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

কাটোয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

রানা সেনগুপ্ত ও সৌমেন দত্ত
বর্ধমান ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০১:০২
Share: Save:

ভোটযুদ্ধের ময়দানে ইতিমধ্যেই গা ঘামাতে শুরু করেছে তিন দল।

বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে তৃণমূলের মমতাজ সঙ্ঘমিতা, সিপিএমের সাইদুল হক ও বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী প্রথম পর্বের প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রেও সিপিএমের ঈশ্বরচন্দ্র দাস প্রচার শুরু করেছেন। কর্মিসভা শুরু করেছেন তৃণমূলের সুনীল মণ্ডল, বিজেপির সন্তোষ রায়েরা। অথচ, কংগ্রেসে এখনও প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। ফলে, দেওয়াল লিখনও সে ভাবে শুরু হয়নি। কোথাও আবার দেওয়াল দখল করে প্রার্থীর নামের জায়গাটা ফাঁকাই রেখে দিতে হয়েছে কর্মীদের।

বৃহস্পতিবার বর্ধমানের টাউন হলে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা নুরুল ইসলামের স্মরণসভায় কর্মীরা দলের এই পরিস্থিতি নিয়ে সরব হলেন। তাঁদের একাংশ বহিরাগত হেভিওয়েট প্রার্থী নয়, বরং এলাকার নেতাদের কাউকে প্রার্থী করার দাবিও তুললেন। স্মরণসভায় আসার কথা ছিল মানস ভুঁইয়া, সোমেন মিত্রের মতো নেতাদের। দলের সাধারণ কর্মীরা আশা করেছিলেন, ভোটের মাঠে নামার উৎসাহ মিলবে নেতাদের কাছে। কিন্তু, কার্যত হাতেগোনা নেতা হাজির হলেন সভায়। ছিলেন না জেলা কমিটির সভাপতি আভাস ভট্টাচার্য, যুব নেতা ইন্তেখাব আলম, জেলার অন্যতম নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়েরাও। এমনকী, এই সভা যে জেলা গ্রামীণ কংগ্রেসের ডাকে হচ্ছে, ফ্লেক্সে তা-ও লেখা ছিল না। লেখা ছিল, ‘নুরুল ইসলাম স্মৃতি রক্ষা কমিটি’র উদ্যোগে এই সভা হচ্ছে। এর মধ্যেই কর্মীরা দাবি তোলেন, বহিরাগত কেউ নয়, জেলায় যে নেতারা দলের দুর্দিনে আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই এই দুই লোকসভা আসনে প্রার্থী বাছতে হবে। এ সবের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত জেলা স্তরের নেতারা অস্বস্তিতে পড়েন। কংগ্রেসের প্রবীণ শিক্ষক নেতা শিবপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “নুরুল ইসলাম স্মৃতি রক্ষা কমিটি কী ভাবে তৈরি হয়েছে, তা জানা নেই। জেলা গ্রামীণ কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতারা কেন এই সভায় যোগ দেননি, জানি না। তাঁদের কী আমন্ত্রন জানানো হয়নি?” এই অভিযোগ নিয়ে সভায় গুঞ্জন শুরু হয়।

দলের প্রাক্তন জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই কমিটি কী করে তৈরি হল, জানা দরকার। আভাসবাবুরা কেন আসেননি, তাঁদের কী ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, তা-ও জানা দরকার।” সভায় কোথাও কংগ্রেসের নাম না থাকা যে অন্যায়, মেনে নেন তিনি। তবে স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করার দাবি প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, “লোকসভা আসনে প্রার্থী ঠিক করার ক্ষমতা জেলা বা প্রদেশ কংগ্রেসের নেই। কংগ্রেস হাইকম্যান্ড যত দিন না প্রার্থী ঠিক করেন, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।”

জেলায় কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কাটোয়াতেও অনেকটাই হাত গুটিয়ে কংগ্রেস। অনেক দেওয়ালে হাত চিহ্নে ভোট দেওয়ার আবেদন, পাশে নামের জায়গা ফাঁকা। অথচ মিছিল, কর্মিসভায় অন্য দলের প্রচার জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাসের বাড়ি এই শহরেই। তৃণমূলের সুনীল মণ্ডলকে নিয়েও প্রচার শুরু করেছেন স্বপন দেবনাথ। ‘চায়ে পে চর্চা’ এখনও শুরু না হলেও বিজেপি-র সন্তোষবাবু ভাল ফলের ব্যাপারে আশাবাদী। এ অবস্থায় কংগ্রেস কর্মীদের প্রশ্ন, মাঝে আর চল্লিশ দিন। এর মধ্যে পুরো এলাকায় প্রচার সারা যাবে তো?

কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মানুষ দলকে ভোট দিয়ে এক জন প্রার্থীকে নির্বাচন করেন। আমাদের কর্মীরা প্রচার শুরু করেছেন। আশা করি, যে কোনও দিন প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে যাবে।” এ দিন বর্ধমানে তিনি হাত গুটিয়ে বসে না থেকে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে নির্বাচনের কাজ শুরুর পরামর্শ দেন কর্মীদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE