বর্ধমান মেডিক্যালে আহতেরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রস্তাবিত রাস্তা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত হয়েছেন তৃণমূলের উপপ্রধান-সহ তিন জন। অভিযোগের তির তৃণমূলেরই আরেক গোষ্ঠী, বর্ধমান ১ ব্লক সভানেত্রী কাকলী তায়ের দিকে।
বৃহস্পতিবার রায়ান ১ পঞ্চায়েতের ঘটনা। আহত উপপ্রধান মানিক মণ্ডল-সহ তিন জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মানিকবাবুর স্পষ্ট অভিযোগ, “আমাকে যাঁরা মেরেছে তাঁরা আমাদের বিরোধী গোষ্ঠীর নেত্রী কাকলি তায়ের অনুগামী।” কাকলীদেবী অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ।
উপপ্রধানের দাবি, রায়ান ১ পঞ্চায়েতের নারি দাসপাড়ার কাছে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার একটি সিমেন্টের ঢালাই রাস্তা অনুমোদিত হয়েছে। এ দিন ওই রাস্তাটির মাপঝোক করতে পঞ্চায়েতের সদস্য, উপপ্রধান নিজে, উন্নয়ন সংস্থার কর্মী-সহ অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। রাস্তাটি কোথা দিয়ে গেলে ভাল হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। অভিযোগ, তখনই এলাকার প্রায় ৪০-৫০ জন কাকলীদেবীর অনুগামী তৃণমূল কর্মী তাঁদের উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করেন। তাতেই উপপ্রধান-সহ জীবন পাল, দেবু পাল ও তরুণ মল্লিক আহত হন। জীবন পাল এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য। অন্য দু’জন তৃণমূল কর্মী। জীবনবাবুর আঘাত গুরুতর বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে শুয়ে জীবনবাবু বলেন, “দলের লোকেরাই যে এভাবে মারধর করবে, তা বুঝতে পারিনি।” তাঁর দাবি, “কাকলিদেবীর লোকেরা দাসপাড়ায় রাস্তা তৈরি হোক তা চাননা। কিন্তু এ ব্যাপারে আগে আমাদের কিছু জানাননি। তাই আচমকা মারধরে আমরা হতবাক।” মানিকবাবুরও দাবি, “কয়েকজন ঠিকাদারের সঙ্গে কাকলিদেবীর যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার ওই রাস্তার কাজের বরাত পায়নি। তাই হয়তো ওই লোকেরাই আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।” তিনি বলেন, “পুলিশ হাসপাতালে এসেছিল। সমস্তটা জানিয়েছি। আশা করি পুলিশ তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
বর্ধমান থানা সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ওই উপপ্রধান প্রথমে থানায় এসেছিলেন। কিন্তু কোনও অভিযোগ না জানিয়েই হাসপাতালে ভতির্র্ হয়ে যান। অভিযোগ দায়ের করলেই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশের দাবি।
তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কাকলি তায়ের দাবি, “জেলা উন্নয়ন সংস্থার একটি রাস্তা অনুমোদিত হয়েছে। বুধবার তার মাপামাপি করতে গিয়েছিলেন উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের কাজ করতে দেয়নি উপপ্রধানের লোকেরা। পরে আমাদের অঞ্চল সভাপতি সুকুর আলি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পালকে ওই ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে অপমানিত হন।” তাঁর দাবি, “বৃহস্পতিবার সকালে সুকুর সাহেব লোকজন নিয়ে কেন তাঁকে অপমান করা হয়েছে তা জানতে গেলে গোলমাল শুরু হয়। উপপ্রধানের লোকেরা তখন ওদের মারধরও করেছে। ঘটনার কথা জানতে পেরেই সকলকে থানায় গিয়ে মীমাংসা করে নিতে বলেছি। তবে এর সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই। এলাকায় উন্নয়ন যেমন চলার চলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy