Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ খনির পাশে ফাটল, ধোঁয়া-আগুন ধান্ডাডিহিতে

ইসিএলের বন্ধ খোলামুখ খনিতে ভয়াবহ আগুন লাগল অন্ডালে। মাধবপুর কোলিয়ারির ধান্ডাডিহি খনি থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে শনিবার সকাল থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। খনিমুখে মাঝে-মধ্যে আগুনও দেখা গিয়েছে। রবিবার দিনভরও ধোঁয়া ও আগুন বেরোনো বন্ধ হয়নি। সংস্থার বন্ধ করে দেওয়ার পরে এই খনিতে অবৈধ খননের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি করেছেন ইসিএলের কর্তারা।

মাধবপুর কোলিয়ারির ধান্ডাডিহি খনি এলাকায় রবিবার ছবিটি তুলেছেন ওমপ্রকাশ সিংহ।

মাধবপুর কোলিয়ারির ধান্ডাডিহি খনি এলাকায় রবিবার ছবিটি তুলেছেন ওমপ্রকাশ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অন্ডাল শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০১:০৩
Share: Save:

ইসিএলের বন্ধ খোলামুখ খনিতে ভয়াবহ আগুন লাগল অন্ডালে। মাধবপুর কোলিয়ারির ধান্ডাডিহি খনি থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে শনিবার সকাল থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। খনিমুখে মাঝে-মধ্যে আগুনও দেখা গিয়েছে। রবিবার দিনভরও ধোঁয়া ও আগুন বেরোনো বন্ধ হয়নি। সংস্থার বন্ধ করে দেওয়ার পরে এই খনিতে অবৈধ খননের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি করেছেন ইসিএলের কর্তারা।

ইসিএল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধান্ডাডিহি গ্রামের অদূরে এই খোলামুখ খনিটিতে বছর দুয়েক আগে থেকে কয়লা তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। খনিটি ছাই দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, কিছু দিন পর থেকে ছাই সরিয়ে ফের কয়লা কাটতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। বিষয়টি পুলিশকে বারবার জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি বলে ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি। আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব যদিও বলেন, “মাধবপুর কোলিয়ারির ধান্ডাডিহি এলাকা থেকে কয়লা চুরির বিষয়ে ইসিএল কোনও লিখিত অভিযোগ করেছে বলে আমার জানা নেই।”

ইসিএল সূত্রে জানা যায়, অবৈধ খননের জেরে তৈরি হওয়া গর্ত দিয়ে ওই খনিগর্ভে হাওয়া ঢুকেছে। সেই হাওয়ার সংস্পর্শে এসে কয়লার স্তর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তা থেকে ভূগর্ভস্থ কয়লায় আগুন লেগে গিয়েছে। এর জেরে খোলামুখ খনিটি থেকে দু’শো মিটার দূরে জমিতে গোটা পাঁচেক ফাটল তৈরি হয়। সেগুলি দিয়েই শনিবার সকাল থেকে আগুন ও ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অভিযোগ করেন, ওই খোলামুখ খনিতে কয়লা কাটা শেষ হওয়ার পরে ছাই ভরাট করতে গেলে দুষ্কৃতীরা বাধা দিয়েছিল। পরে পুলিশের সাহায্য নিয়ে ওই খনিতে ছাই ভরাট করা হয়। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই দুষ্কৃতীরা ছাই সরিয়ে আবার কয়লা কাটা শুরু করে। তাঁর আরও অভিযোগ, “শনিবার সন্ধ্যায় ওই খোলামুখ খনি ও আশপাশের গর্তে ধোঁয়া ও আগুনের খবর পেয়ে গিয়েছিলেন সংস্থার সুরক্ষা আধিকারিক। তখন দুষ্কৃতীরা তাঁকে হেনস্থা করে। রবিবার সকাল থেকে পুলিশের সাহায্যে ওই গর্তগুলিতে ছাই ভরাটের কাজ চলছে।” নীলাদ্রিবাবুর দাবি, আগুন আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।

খনিতে আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। স্থানীয় সিপিএম নেতা মলয় বসুরায়ের অভিযোগ, “ইসিএল আদপে ওই খনিতে কোনও ছাই ভরাট করেনি। কারণ, ছাই ভরাটের পরে অবৈধ খনন সম্ভব নয়।” তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্রের আবার দাবি, “খোলামুখ খনি বন্ধ করলেও সেখানে ফের কয়লা কাটায় যে গর্তগুলি তৈরি হয়েছিল, ইসিএল সেগুলি ভরাট করেনি। সেখান থেকেই আগুন লেগেছে। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে ইন্ডিয়ান অয়েলের পাইপলাইন। তিনটি গ্রামও রয়েছে। অবৈধ খনন বন্ধ না করলে যে কোনও দিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coal mine ecl fire smoke andal madhabpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE