Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কড়া নিরাপত্তায় ১৯ জেলায় ৫৭৩ বুথে চলছে পুনর্নির্বাচন

সোমবার ভোটের দিন ছাপ্পা ভোট থেকে ব্যালট ছিনতাই, ব্যালট বাক্স জ্বালানো থেকে জলে ‘বিসর্জন’— সবই দেখেছে গ্রাম বাংলা।

পটাশপুরের ৯৪ নম্বর বুথে মদনমোহন প্রাথমিক বিদ্যলয়ে পুনঃনির্বাচন। নিজস্ব চিত্র।

পটাশপুরের ৯৪ নম্বর বুথে মদনমোহন প্রাথমিক বিদ্যলয়ে পুনঃনির্বাচন। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

পুনর্নির্বাচনেও রেকর্ড গড়ল এ বারের পঞ্চায়েত ভোট। ঝাড়গ্রাম বাদে রাজ্যের ১৯টি জেলার ৫৭৩টি বুথে ফের ভোট হবে বলে মঙ্গলবার ঘোষণা করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই সংখ্যাও চূড়ান্ত নয়। রাতে তা সামান্য বাড়তে পারে বলে কমিশন সূত্রের ইঙ্গিত। ওই সব বুথেও আজ, বুধবারই পুনর্নির্বাচন হবে।

সোমবার ভোটের দিন ছাপ্পা ভোট থেকে ব্যালট ছিনতাই, ব্যালট বাক্স জ্বালানো থেকে জলে ‘বিসর্জন’— সবই দেখেছে গ্রাম বাংলা। যে সব বুথে এই সব ঘটনা ঘটেছে, তার অধিকাংশতেই পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ৪৬,৭০৫টি বুথে ভোট হয়েছিল সোমবার। বুধবার তার ১.২২ শতাংশ বুথে ফের ভোট হবে।

কমিশন সূত্রের খবর, সোমবার রাত থেকেই বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ভোট সংক্রান্ত রিপোর্ট আসতে শুরু করে। ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে শুরু হয় ঝাড়াই বাছাই। কিন্তু কত বুথে পুনর্নির্বাচন হবে, তা নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই টানাপড়েন শুরু হয়ে যায় নবান্নের সঙ্গে। যা চলে গোটা দিন ধরে। শেষে সন্ধ্যায় পুনর্নির্বাচনের বুথের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়। প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘কতগুলি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে, তা সম্পূর্ণ কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত। সরকারের কোনও বক্তব্য নেই।’’

আরও পড়ুন:
হিংসা চলছেই, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১
‘অশান্ত বাংলায় নিহত গণতন্ত্র’, পঞ্চায়েত নিয়ে চড়া আক্রমণে মোদী

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এতগুলি বুথে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত কার্যত নজিরবিহীন। কিন্তু বিরোধীরা তাতে খুশি নন। তাঁরা অনেক বেশি বুথে পুনর্নির্বাচন চেয়েছিলেন। যেমন, বিজেপির দাবি ছিল ২৩০০ বুথে ফের ভোট করাতে হবে। বিরোধীদের বক্তব্য, গোলমাল হওয়া অনেক বুথেই ফের ভোট হচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়কে তুলে ধরছেন তাঁরা।

ঝিক্কোডা পঞ্চায়েতে পুনঃনির্বাচন। সিঙারী পারকাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলাদের লম্বা লাইন।

লাগাতার অশান্তির ঘটনা সত্ত্বেও সেখানে কোথাও পুনর্নির্বাচন হচ্ছে না। কমিশনের এক কর্তার দাবি, ‘‘জেলা প্রশাসন থেকে ভাঙড় নিয়ে অভিযোগ আসেনি। মোটের উপর সেখানে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।’’

সোমবার ভোটের দিনে ব্যাপক গোলমালের পরে পুনর্নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এ দিন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ।

পুনর্নির্বাচন কোথায় কত (সংখ্যার হিসেবে প্রথম পাঁচ)

সূত্র: রাজ্য নির্বাচন কমিশন

পুনর্নির্বাচনে নিরাপত্তার ‘দায়’ অবশ্য কমিশনের দিকেই ঠেলেছে রাজ্য। নবান্নের মতে, বুধবারের নিরাপত্তা কী হবে, তা স্থির করবে কমিশনই। সূত্রের খবর, ভোটগ্রহণ চত্বরের দায়িত্বে থাকবেন সাব-ইনস্পেক্টর বা অ্যাসিট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসারেরা। বুধবার ভোটারদের বাঁ হাতের মধ্যমাতে কালি লাগানো হবে। কারণ, সোমবার বাঁ হাতের তর্জনীতে কালি লাগানো হয়েছিল।

এ দিন দফতর থেকে বেরনোর সময় অমরেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ জানিয়েছে, ভোটের সময়ে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। চারটির সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই। অনুসন্ধান চলছে। কাকদ্বীপের দু’টি মৃত্যুর ফরেন্সিক তদন্ত হচ্ছে।’’ ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে কি আপনি সন্তুষ্ট? এই প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ‘‘এখন প্রশ্ন করে কী লাভ। ভোট তো কাল হয়ে গেছে। পুনর্নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করুন।’’

আজ পুনর্নির্বাচনে অশান্তির ঘটনা ঘটলে ফের ভোটের সম্ভাবনা কার্যত নেই বলেই মত প্রশাসনের। তাঁদের মতে, বৃহস্পতিবার ভোট গণনা। ফলে হাতে সময় নেই। তাই পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা প্রায় নেই। ভোট প্রক্রিয়া ২১ মে মধ্যে শেষ করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE