Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bhadreswar

শত ব্যস্ততায়ও থামেনি ডাক্তারবাবুর মূর্তিগড়া, জগদ্ধাত্রী পুজোয় বার্তা থ্যালাসেমিয়া রোখার

ছোটবেলায় খেলাচ্ছলেই মূর্তিগড়ায় মন দিয়েছিলেন বিপ্লবেন্দু। চন্দননগরের স্কুল থেকে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।

নিজের বাড়ির পুজোর জন্য জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা গড়েছেন বিপ্লবেন্দু তালুকদার।

নিজের বাড়ির পুজোর জন্য জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা গড়েছেন বিপ্লবেন্দু তালুকদার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২১ ১৭:১৮
Share: Save:

মূর্তিগড়ার শুরুটা হয়েছিল শিশু বয়সে। তখন বয়স মোটে ছয়। তার পর দেখতে দেখতে চার দশক পেরিয়ে গিয়েছে। তবে শত ব্যস্ততার মাঝেও মূর্তি গড়ার কাজ থামেনি ভদ্রেশ্বরের শান্তিনগরের ডাক্তারবাবু বিপ্লবেন্দু তালুকদারের। চলতি বছরেও নিজের বাড়ির পুজোর জন্য জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা গড়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া রোখার জন্যও সেখান থেকেই প্রচার চালাবেন ডাক্তারবাবু।

ছোটবেলায় খেলাচ্ছলেই মূর্তিগড়ায় মন দিয়েছিলেন বিপ্লবেন্দু। চন্দননগর কানাইলাল স্কুল থেকে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষা শেষ করেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। এই মুহূর্তে মেডিক্যাল কলেজেই সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে থ্যালাসেমিয়া স্টেট হেড প্রোগ্রাম অফিসার পদেও রয়েছেন। তবে গুরুদায়িত্ব সামলে আজও বাড়ি ফিরে বসে পড়েন মূর্তিগড়ার কাজে। নিছকই খেলাচ্ছলে যা এককালে শুরু হয়েছিল, তা প্রায় নেশায় পরিণত।

বিপ্লবেন্দুর পরিবার জানিয়েছে, কাজকর্ম সেরে বাড়ি ফিরে প্রতি রাতে উঠোনে বসে জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা গড়ার কাজে মন দেন তিনি। কাঠামোয় খড় বেঁধে মাটিমাখা মূর্তি তৈরির পর রং করা থেকে শুরু করে চক্ষুদান— সব কাজই নিজে হাতে করেন বিপ্লবেন্দু। মাঝেমধ্যে বাড়ির লোকজনও হাত লাগান। এ কাজে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিতেন বিপ্লবেন্দুর দিদি রত্না তালুকদার। আর উঠোনে বসে ছেলের ঠাকুর গড়া দেখতেন মা উষারানি দেবী। চলতি বছরের ফেরুয়ারি-মার্চ মাসে দু’জনকেই হারিয়েছেন বিপ্লবেন্দু। সে বিষাদ কাটিয়েও জগদ্ধাত্রীর প্রতিমা গড়ার কাজ করে গিয়েছেন। বিপ্লবেন্দু বলেন, ‘‘মা জগদ্ধাত্রীই হয়তো আমাকে শক্তি যোগান তাঁর মূর্তি তৈরি করার জন্য।’’

তালুকদার বাড়ির পুজোয় থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা প্রচার।

তালুকদার বাড়ির পুজোয় থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

তালুকদার বাড়ির পুজোর সব দায়িত্বই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিপ্লবেন্দু। তাঁর স্ত্রী সঞ্চয়িতার কথায়, ‘‘নিজে হাতেই সবটা করে বিপ্লব। আমরা হয়তো সামান্য সাহায্য করি। তবে এত বড় কর্মযজ্ঞে সেটা কিছুই না। অফিস করে রাতে ফিরে হয়তো জামাকাপড় না ছেড়েই কাজে লেগে গেল। দিদি রত্না তালুকদার ওকে সব সময় সাহায্য করত। কোথায় আলো লাগানো হবে,প্যান্ডেল কী রকম হবে, ঠাকুরের কাপড় কী রঙের হবে— সব দিদিই দেখত। দিদির না থাকাটা খুব মিস্‌ করছি!’’

চলতি বছরের পুজোয় থ্যালাসেমিয়া নিয়েও সচেতনতায় সচেষ্ট হয়েছেন বিপ্লবেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘তালুকদার বাড়ির পুজো থেকে থ্যালাসেমিয়া রোখার জন্য প্রচার চালানো হবে। এ নিয়ে পোস্টারও করেছি। ‘কোষ্ঠী নয়, রক্ত পরীক্ষা করুন’।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhadreswar Jagaddhatri Puja Idol Makers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE