Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এখন দিল্লি যেতে চান না গুরুঙ্গ

মোর্চার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের দুঃসময়ে দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সহযোগিতাও চাইছেন গুরুঙ্গ-অনুগামীরা। পাহাড়ে হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতি কাম্য নয় বলে সম্প্রতি বিবৃতি দিয়েছেন অহলুওয়ালিয়া।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৪
Share: Save:

কখনও তিনি নাকি থাকছেন তিস্তার ধারে। কখনও আবার রঙ্গিতের পাশের গোপন ডেরায়। মোর্চার একটি অংশের দাবি, যেখানেই থাকুন না কেন, দার্জিলিং-সিকিম-শিলিগুড়ি-ডুয়ার্সের ‘নেটওয়ার্ক’টা নষ্ট হয়নি বিমল গুরুঙ্গের। তাই পশ্চিমবঙ্গ-সিকিমের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা রঙ্গিত নদীর ধারে এক গোপন ঘাঁটিতে বসেও তিনি পুলিশ-সিআইডির কড়াকড়ি সম্পর্কে যথেষ্টই ওয়াকিবহাল, দাবি মোর্চার গুরুঙ্গপন্থী অংশের। ওই নেতারা আরও জানাচ্ছেন, সব দেখেশুনে ছক বদলেছেন গুরুঙ্গ। তিনি আর এখন দিল্লি যেতে ততটা আগ্রহী নন। বরং, তাঁর নির্দেশে দু’এক দিনের মধ্যে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কোনও কর্তাব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে পারে মোর্চার প্রতিনিধি দল। তাতে জিএমসিসি-র একাংশকেও সামিল করা হোক, চাইছেন গুরুঙ্গই।

দল সূত্রের খবর, জিএমসিসি-র সদস্য জিএনএলএফ, জন আন্দোলন পার্টিকে সামিল করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কারও কাছে গেলে কিছুটা অতিরিক্ত সুবিধা মিলবে। তা হল, একক ভাবে গুরুঙ্গের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলে সেখানে ইউএপিএ-সহ নানা হিংসার মামলার প্রসঙ্গ উঠতে পারে। তাতে জটিলতা বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রী অস্বস্তি এড়াতে সরকারি দেখা করতে চাইবেন না। যেমন এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মোর্চা প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে দেখা করেন।

স্বীকার: মিরিকে বিস্ফোরণের দায় মেনে মিরিকে জিএলএ-র পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

মোর্চার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের দুঃসময়ে দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সহযোগিতাও চাইছেন গুরুঙ্গ-অনুগামীরা। পাহাড়ে হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতি কাম্য নয় বলে সম্প্রতি বিবৃতি দিয়েছেন অহলুওয়ালিয়া। সেটা মনে করিয়ে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, দার্জিলিঙের সাংসদের কাছে তাঁরা যেতেই পারেন। সেখানে কোনও সদর্থক আলোচনার পরে দিল্লি থেকেই গুরুঙ্গকে সব জানানো হবে। এর পরে গোপন ডেরা থেকেই গুরুঙ্গ ভিডিও মারফত কেন্দ্রের আর্জি মেনে বন্‌ধ তোলার কথা ঘোষণা করে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানাতে পারেন (সিকিমের এডিজি সুধাকর রাও অবশ্য এ দিন এক বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছেন, গুরুঙ্গ সিকিমে নেই)। মোর্চার এক শীর্ষ নেতা জানান, দিল্লিতে দৌত্য সফল হলে উত্তরকন্যায় ১২ সেপ্টেম্বরের আলোচনায় গুরুঙ্গ ৫ জনের প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথাও ঘোষণা করতে পারেন। তাঁরা গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা তোলার আর্জি জানিয়ে কিছুটা সময় কেনার চেষ্টা করবেন। যাতে আদালত থেকে আগাম জামিন পান গুরুঙ্গ ও তাঁর অনুগামীরা।

জিএমসিসি অবশ্য রাত পর্যন্ত মোর্চার কাছ থেকে কোনও প্রস্তাব পায়নি। তাঁদের আরও ক্ষোভ, প্যাঁচে পড়লে গুরুঙ্গ তাঁদের স্মরণ করেন, আর বিপদ কাটলেই নিজেকে জাহির করেন! জাপের এক মুখপাত্র জানান, আপাতত তাঁরা দিল্লি নয়, তাকিয়ে ১২ তারিখের বৈঠকের দিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE