দিব্যেন্দু অধিকারী। ফাইল ছবি।
সরকারি উদ্যোগে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে হলদিয়া মেলা। ওই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী, শাসক তৃণমূলের বিধায়ক থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তাদের। কিন্তু ডাক পেলেন না হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। শুধু তা-ই নয়, হলদিয়া যে লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে, সেই তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও ‘ব্রাত্য’। যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় হলদিয়া মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান রয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা এবং শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। হাজির থাকার কথা জেলায় শাসকদলের অন্য বিধায়কদেরও। কিন্তু আমন্ত্রিত নন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক। পদ্মশিবিরের বক্তব্য, সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের ‘ব্রাত্য’ রাখা বর্তমান শাসকদলের সংস্কৃতি। হলদিয়া মেলার অনুষ্ঠানে না-ডাকা তার আরও এক প্রমাণ। রাজ্যে খাতায়কলমে তৃণমূলের সাংসদ হলেও ডাকা হয়নি দিব্যেন্দুকে। তমলুকের সাংসদ জানান, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। যদিও আমজনতা হিসাবেই তিনি মেলায় যাবেন বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের (তৃণমূল) হয়তো মনে হয়েছে, আমি গেলে ওদের সমস্যা হতে পারে। তাই আমায় ডাকেনি। এ নিয়ে আমার কোনও দুঃখ নেই। আমিও আমজনতার মতোই মেলা যাব। ঘুগনি খাব। মানুষের সঙ্গে ঘুরব।’’ হলদিয়া মেলায় না-ডাকা নিয়ে দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘ওদের থেকে আমি কিছু আশা করি না।’’
তাপসীরও কটাক্ষ, বর্তমান শাসকদল কখনওই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে পারেনি। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। হলদিয়ার বিধায়কের কথায়, ‘‘মানুষের আমাদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করেছেন। এরা আমাদের সম্মান জানানোর প্রয়োজন মনে করেন না। জানায়ও না। এটাই এদের কালচার (সংস্কৃতি)।’’
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এলাকার কোনও অনুষ্ঠানেই বিধায়ক বা সাংসদকে দেখা যায় না। তাই, হয়তো মেলার অনুষ্ঠানে তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় করের সাফাই, “আমি আগের যতগুলো আমন্ত্রণপত্র দেখেছি, তাতে কোনও দিনই দিব্যেন্দু অধিকারী বা তাপসী মণ্ডলের নাম দেখিনি। তা ছাড়া ওঁরা যে আছেন, তা কখনওই টের পাওয়া যায়নি। পুরসভা আমাকে যে তালিকা দিয়েছে, সেখানেও কোথাও ওঁদের নাম দেখিনি। তাই এই অনুষ্ঠানে ওঁদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজন বোধ করিনি।”
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই কাঁথির অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে তৃণমূল। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে জোড়াফুলের টিকিটে জেতা সত্ত্বেও অধিকারী পরিবারের গৃহকর্তা শিশির অধিকারী (শুভেন্দু অধিকারী ও দিব্যেন্দুর বাবা) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় হাজির হয়েছিলেন। এর পরেই শিশির এবং দিব্যেন্দুর সাংসদ পদ খারিজের লোকসভার স্পিকারের কাছে জানিয়েছে তৃণমূল। তবে তা এখনও কার্যকর হয়নি। তার মধ্যে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন-সহ একাধিক বিষয়ে বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে দলীয় নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করার অভিযোগ উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy