Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
রোজভ্যালি

হাইকোর্টেও লগ্নি-কর্তার জামিন নামঞ্জুর

নিম্ন আদালতে বার ছয়েক তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টও বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র দাখিল করা তথ্যপ্রমাণ এবং বিভিন্ন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতেই এ দিন ওই লগ্নি-কর্তার আবেদন নাকচ করে দেন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগ।

গৌতম কুণ্ডু

গৌতম কুণ্ডু

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

নিম্ন আদালতে বার ছয়েক তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টও বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র দাখিল করা তথ্যপ্রমাণ এবং বিভিন্ন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতেই এ দিন ওই লগ্নি-কর্তার আবেদন নাকচ করে দেন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগ।
দিন সাতেক আগেই রোজভ্যালির মালিকের বিরুদ্ধে আনা টাকা পাচারের অভিযোগ প্রমাণে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। কিন্তু ইডি-র তদন্তকারীরা সে-দিন আদালতে তা দাখিল করতে পারেননি। হাইকোর্ট তাই ওই সংস্থার মালিকের জামিনের আবেদনের শুনানি মুলতুবি করে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দাখিলের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বিচারপতি। তার পরে তদন্তকারীদের তরফে কিছু তথ্য দাখিল করা হয় বলে আদালত সূত্রের খবর। জমা পড়ে বেশ কিছু সাক্ষীর বয়ানও।
এ দিন রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি বাগ জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবি-র উচ্চপদস্থ কর্তা এবং ওই সংস্থারও শীর্ষস্থানীয় কয়েক জন অফিসার ইডি-র কাছে যে-বয়ান দিয়েছেন, তা পড়ার পরে তিনি অভিযুক্তের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করতে পারছেন না।

তার আগে ইডি-র আইনজীবী শেখ সামসুদ্দিন তাঁর সওয়ালে জানান, বিভিন্ন বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা বেআইনি ভাবে অন্যত্র যে-সব টাকা সরিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংস্থা তার তদন্ত করছে। রোজভ্যালির বিরুদ্ধে তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। এই অবস্থায় অভিযুক্ত লগ্নি-কর্তা জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত করতে পারেন।

ইডি আদালতে যে-সব সাক্ষীর বয়ান দাখিল করেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রোজভ্যালির কয়েক জন ডিরেক্টর এবং আমানতকারীও। একটি সূত্রের খবর, রোজভ্যালির হিসেবপত্র দেখতেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার পদমর্যাদার এমন এক অফিসারের বয়ানও নথিভুক্ত করেছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। মূল বিচারপর্ব শুরু হলে ওই সব বয়ান অবৈধ ভাবে টাকা সরানোর প্রমাণ হিসেবে আদালতে দাখিল করা হবে।

ইডি-র আইনজীবী গত ১৪ জুলাইয়ের শুনানিতে আদালতে জানিয়েছিলেন, রোজভ্যালি গোষ্ঠীর ২৬টি সংস্থার বিরুদ্ধে বাজার থেকে টাকা তোলা, অন্যত্র সরানো ইত্যাদি মিলিয়ে মোট ১৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

গৌতমের আইনজীবী শেখর বসু ও মিলন মুখোপাধ্যায় জামিনের আবেদনে জানান, তাঁদের মক্কেল ১০৪ দিন জেল-হাজতে রয়েছেন। গ্রেফতারের আগে ছ’বার ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন, এমন অভিযোগ করেননি তদন্তকারীরা। তা ছাড়া তাঁর মক্কেলের পাসপোর্ট ইডি-র কাছে জমা রয়েছে। তিনি পালিয়ে যাবেন না। যে-কোনও শর্তে আদালত অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করুক।

কিন্তু ইতিমধ্যে ইডি-র পেশ করা তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষীর বয়ান দেখে বিচারপতি জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে ওই আর্জি মঞ্জুর করা সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE