Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta University

Calcutta University: অতিমারিতে ঢালাও নম্বরের জেরে সমস্যা স্নাতকোত্তরে

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শুধু ভূরি-ভূরি নম্বর নিয়েই পড়ুয়ারা আবেদন করছেন না, বহু ক্ষেত্রে নম্বর দেখে মূল্যায়ন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৬
Share: Save:

অতিমারি পরিস্থিতিতে বাড়িতে বসে পরীক্ষা দেওয়া এবং নিজের কলেজের শিক্ষকের সেই খাতা মূল্যায়নে মেধার যথার্থ বিচার নিয়ে প্রশ্ন আগেই উঠেছিল। এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরে ভর্তির তালিকা প্রকাশের পরে সেই প্রশ্ন বহু গুণ জোরালো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শুধু ভূরি-ভূরি নম্বর নিয়েই পড়ুয়ারা আবেদন করছেন না, বহু ক্ষেত্রে নম্বর দেখে মূল্যায়ন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে ভর্তি পদ্ধতি এবং মেধা তালিকার যথার্থতা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও জমা পড়েছে।

কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার শনিবার জানান, তাঁর কলেজের ছাত্রীদের নাম সম্ভাব্য মেধা তালিকায় নেই বললেই চলে। বিষয়টি তিনি উপাচার্য এবং সহ উপাচার্যকে (শিক্ষা) জানিয়েছেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবিও করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ইংরেজি, বাংলার মতো বিষয়ে মেধা তালিকায় দেখা যাচ্ছে অনেকে ৯০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়েছেন। এ দিকে আমাদের কলেজে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশের কাছাকাছি উঠেছে। শুধু ইংরেজি নয়, অন্যান্য বিষয়েও একই অবস্থা বলে খবর পেয়েছি।’’ শিউলিদেবীর বক্তব্য, তাঁদের কলেজে স্নাতকোত্তরের পঠনপাঠন হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্রেবোর্ন কলেজের ছাত্রীদের সেই কলেজেই স্নাতকোত্তরে ভর্তির অনুমতি দিন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, অধিকাংশ বিষয়ের তালিকাগুলিতে একেবারে শেষের দিকে থাকা প্রার্থীরাও কেউ ৭০ শতাংশের কম পাননি। এমনকি বাংলা সাহিত্যেও এমন ঘটেছে। সাহিত্য এবং অন্যান্য মানবিক বিষয় বা সমাজবিজ্ঞানে এত নম্বর অস্বাভাবিক। তথাকথিত নামী কলেজগুলির তুলনায় অনামী কলেজে নম্বর বেশি উঠেছে। তাই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক বলেই ওই সূত্রের দাবি।

এই নম্বর নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বেথুন কলেজের ছাত্রীরাও। ওই কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় জানান, ইতিমধ্যে ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কলেজের ছাত্রীরা ধারাবাহিক ভাবে ভাল ফল করে আসছেন। কিন্তু স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে তাঁরা এ বার অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। এ বার সব কলেজের পড়ুয়ারা বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিয়েছেন। খাতা নিজেদের কলেজের শিক্ষকেরাই দেখেছেন। খাতা
দেখারও কোনও মাপকাঠি ছিল না।’’ তাঁর মতে এই পরিস্থিতিতে স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষার দরকার ছিল।

বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে প্রশ্নপত্র তৈরি ছাড়া পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনও ভূমিকা ছিল না। বাকি দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কলেজের ওপর ছিল।’’

ছাত্র সংগঠন ডিএসওর পক্ষ থেকে আবু সইদের দাবি, ভর্তি প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে। সমস্ত বিষয়ের স্বচ্ছ তালিকা দ্রুত প্রকাশ করতে হবে এবং ভর্তির সুস্পষ্ট নির্দেশিকাও প্রকাশ করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE