ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।
ফ্ল্যাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় টাকা ও গয়নাগাঁটি রেখে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ করছেন তিনি। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের অভিযোগ, ভবানী ভবনে সিআইডি-র সদর দফতরে গোয়েন্দাকর্তারা তাঁর স্বামীর উপরে মানসিক অত্যাচার করেছেন। এই মর্মে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে আইনজীবীর চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে জানান ভারতী।
বৃহস্পতিবার ভিন্ রাজ্য থেকে ফোনে ভারতী অভিযোগ করেন, বুধবার সকালে তাঁর স্বামী এমএভি রাজুকে ভবানী ভবনে তলব করা হয়েছিল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর স্বামীর উপরে মানসিক অত্যাচার চালিয়েছেন সিআইডি-কর্তারা। ভারতী বলেন, ‘‘বাজেয়াপ্ত করা ল্যাপটপে পাওয়া আমার ব্যক্তিগত জীবনের কিছু ছবি বিকৃত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে রাজুকে হুমকি দিয়েছেন গোয়েন্দাকর্তারা। বিভিন্ন ভাবে আমার চরিত্র কালিমালিপ্ত করা হবে বলে শাসানো হয়েছে আমার স্বামীকে।’’
তার পরেই ডিজি-কে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতী জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর স্বামী রাজুর আইনজীবী ওই অভিযোগ সংবলিত চিঠি রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থের দফতরে জমা দিয়েছেন। বিকেলে ডিজি-র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘আমি এখনও এই ধরনের কোনও চিঠি পাইনি।’’ তবে সিআইডি-র তরফে রাজুর উপরে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সিআইডি-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, রাজুকে মূলত নেতাজিনগরের একটি ফ্ল্যাটের বিষয়ে জেরা করা হয়েছে। ভারতীর সম্বন্ধে কোনও কুরুচিকর কথা বলা হয়নি।
সিআইডি সূত্রের খবর, বুধবার নেতাজিনগরের উপাসনা নামে একটি আবাসনের তিন নম্বর ফ্ল্যাটের মালিক সৈকত গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে দু’কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
সিআইডি-র এক কর্তা জানান, কৃষ্ণেন্দু নামে সৈকতের এক বন্ধুর সঙ্গে রাজুর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। কৃষ্ণেন্দুই সৈকত নামে ওই প্রোমোটারের কাছ থেকে তাঁর ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে রাজুকে দিয়েছিলেন। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ফ্ল্যাটে ভারতীর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলের যাতায়াত ছিল। ফ্ল্যাটে কাঠের দরজার পাশাপাশি একটি লোহার গ্রিলের দরজাও আছে। কাঠের দরজার দু’টি চাবি। কৃষ্ণেন্দুর কাছ থেকে নেওয়া একটি চাবি রাজুর কাছে ছিল। অন্য চাবিটি সৈকতের কাছে ছিল। রাজুর কাছ থেকে চাবি নিয়ে সুজিত কাঠের দরজা বন্ধ করার পরে লোহার গ্রিলের দরজায় তালা দিয়ে দিয়েছিলেন। ওই তালার চাবি আছে শুধু সুজিতের কাছেই। বুধবার লোহার দরজার তালা ভাঙার পরে চাবি দিয়ে কাঠের দরজা খোলা হয়।
তখন সৈকতও ছিলেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ওই ঘরে একটি আলমারি রয়েছে, যেটা তাঁর নয় বলে তল্লাশির সময়ে জানান সৈকত। ওই আলমারি ভেঙেই নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ভারতী ফোনে বলেন, ‘‘আমার স্বামী বা আমি সৈকত-কৃষ্ণেন্দু নামে কাউকে চিনি না। সিআইডি নিজেরাই লোক ঠিক করছে। টাকা রেখে আসছে। তার পরে আমাকে আর আমার স্বামীকে জড়িয়ে দিচ্ছে। আমার স্বামীর উপরে এমন মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করে না-ফেলেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy