Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাঠ্যক্রম নিয়ে গুরুর সঙ্গে দ্বন্দ্ব শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষক আর শিষ্যের বৌদ্ধিক বিতর্ক স্বাস্থ্যকর বলেই বিদগ্ধজনের অভিমত। কিন্তু যে-বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালীর মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে, সেটা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম নিয়ে। মতভেদ মূলত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ পাঠ্যক্রম চালু রাখা নিয়ে। শিক্ষামন্ত্রীর পিএইচডি-র গাইড ছিলেন অনিলবাবু। ফলে গুরু-শিষ্যের দ্বন্দ্বে শিক্ষা দফতর সরগরম।

অনিল ভুঁইমালী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়

অনিল ভুঁইমালী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

শিক্ষক আর শিষ্যের বৌদ্ধিক বিতর্ক স্বাস্থ্যকর বলেই বিদগ্ধজনের অভিমত। কিন্তু যে-বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালীর মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে, সেটা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম নিয়ে। মতভেদ মূলত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ পাঠ্যক্রম চালু রাখা নিয়ে। শিক্ষামন্ত্রীর পিএইচডি-র গাইড ছিলেন অনিলবাবু। ফলে গুরু-শিষ্যের দ্বন্দ্বে শিক্ষা দফতর সরগরম।

সরকারের কাছে উপাচার্যের প্রস্তাব ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স এবং এমএ পাঠ্যক্রমই থাকুক। পাশ কোর্স পড়ানো হোক অন্যত্র। কিন্তু তাঁর ওই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। উপাচার্যকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, অনার্স, এমএ-র পাশাপাশি নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ পাঠ্যক্রমও চালু রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক বিষয় পড়ানোর রীতি না-থাকলেও উচ্চশিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে বাধ্য হন উপাচার্য। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর দিকটি বিবেচনা করেই আমি ওই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকার যেমন চাইবে, তেমনই হবে। প্রয়োজনে কয়েকটি স্কুলে সকালে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’’ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, হাজার দুয়েক পড়ুয়া ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ কোর্সে পড়াশোনা করে। তারা যাবে কোথায়? তাই উপাচার্যের প্রস্তাব মানা সম্ভব হয়নি বলে মন্ত্রী জানান।

সরকারি সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সঙ্গে উপাচার্যের মনোমালিন্য হয়েছে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী তা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, উপাচার্য যা উপযুক্ত মনে করেছেন, প্রস্তাবের আকারে দিয়েছেন। কিন্তু সরকার যে-নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাই বিশ্ববিদ্যালয়কে মেনে নিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি উপাচার্যও। তিনি বলেন, ‘‘কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। সরকার যেমন চাইবে, তেমনই হবে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কর্ণজোড়া হাইস্কুল ও কৈলাসচন্দ্র রাধারানি বিদ্যাপীঠে সকালে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ কোর্সের পঠনপাঠন চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। গত বুধবার ওই দু’টি স্কুল পরিদর্শনও করেছেন উপাচার্য। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অযথা উদ্বেগের কিছু নেই। ওই দুই স্কুলে পাশ কোর্সের পঠনপাঠন চালু করার ব্যাপারে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

জেলাশাসক রণধীর কুমার জানান, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ কোর্স চালু রাখা যায়, সেই ব্যাপারে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ ৮ জুন থেকে বিভিন্ন অনার্স বিষয়ে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু পাশ কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া ঠিক কবে শুরু হবে, সেই বিষয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁরা কিছুই জানাতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE