Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
TMC

TMC: মায়ের কথায় কোটি টাকার বাড়ি! তোলাবাজি করি না আমি, বলছেন বাদুরিয়ার তৃণমূল নেতা

উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আড়বালিয়ায় তৃণমূল কাউন্সিলর সুধাংশু মণ্ডলের বাড়ির এ হেন নামডাক এলাকায়।

নিজস্ব চিত্র।

নির্মল বসু 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২২ ০৬:১৩
Share: Save:

কাউন্সিলরের বাড়িটা কোন দিকে?

প্রশ্ন শুনলেই এলাকার লোকে পাল্টা জানতে চান, ‘‘কোটি টাকার বাড়ি দেখতে যাবেন বুঝি?’’

উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আড়বালিয়ায় তৃণমূল কাউন্সিলর সুধাংশু মণ্ডলের বাড়ির এ হেন নামডাক এলাকায়। তাঁর নিজেরও নামডাক কম নয়। ছোটখাট একখানা ওষুধের দোকান ছিল এক সময়ে। ভাগ্য খোলে ভোটের টিকিট পাওয়ার পরে। চারবারের কাউন্সিলর তিনি। একবার উপ পুরপ্রধানও ছিলেন।

প্রায় এক বিঘে জমিতে ১০ কাঠা জুড়ে পেল্লায় দোতলা বাড়ি তাঁর। সম্পত্তি নিয়ে লুকোছাপা বিশেষ নেই। সুধাংশ বলেন, ‘‘পুরনো দোতলা বাড়িটা ভেঙে পড়ছিল।
মা চেয়েছিলেন, একটা ঠিকঠাক বাড়ি যেন দাঁড় করাতে পারি। ওঁর কথা রাখতেই হাজার সাতেক বর্গফুটের বাড়িটা করেছি।’’

লোকে যে বলে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য নেই আপনার?

সুধাংশুর সাফাই, ‘‘বিরোধীরা এমন অনেক কথা বলে। সততার জন্যই মানুষ আমাকে চারবার ভোটে জিতিয়ে কাউন্সিলর করেছেন।’’ সুধাংশুর কথায়, ‘‘দেখুন, মানুষটা আমি শৌখিন প্রকৃতির। প্রথমে কংগ্রেসের হয়ে, পরে তৃণমূলের হয়ে সাতাশ বছর ধরে রাজনীতি করছি। একটা বাড়ি, কিছুটা জমি আর ছেলের জন্য একটা গাড়ি বই আর কিছুই তেমন করিনি!’’

কাউন্সিলর হিসেবে মাসে ভাতা তো পান মেরেকেটে হাজার দেড়েক টাকা। শখ-শৌখিনতা, ঠাটবাটের খরচ নিশ্চয়ই তা দিয়ে চলে না!

বছর উনষাটের সুধাংশু এমনিতে ঠান্ডা মাথার। একগাল হেসে বলেন, ‘‘বাবার সরকারি চাকরি ছিল। অবস্থা কোনও দিনই আমাদের খারাপ নয়। তা ছাড়া, স্ত্রীর খামারে ১১ হাজার মুরগি আছে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের ঠিকাদারির লাইসেন্স আছে। সেখানেও কাজে হাত লাগাতে হয় আমাকে। কাজেই মানুষের কাছ থেকে তোলাবাজি করে বাড়ি তৈরি করার দরকার পড়েনি।’’ এলাকায় তাঁর মতো কোটি টাকার বাড়ি হয় তো আর চোখে পড়বে না। সুধাংশুর মতে, ‘‘কোটি টাকার বাড়ি হলেও আমার সততাকে মানুষ পছন্দ করেন।’’
ভোট এলেই বিরোধীরা তাঁর ‘কোটি টাকার বাড়ির’ পিছনে হাত ধুয়ে লেগে পড়ে— সে কথা মানেন সুধাংশু। দুর্নীতির অভিযোগ অবশ্য গায়ে মাখেন না তিনি। তাঁর মতে, ‘‘সবটাই বিরোধীদের মিথ্যা প্রচার।’’

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা বাদুড়িয়ার বাসিন্দা অনিমেষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সত্যি-মিথ্যা বলতে পারব না। তবে সামান্য ওষুধের দোকানি থেকে মুরগির ব্যবসা করে হঠাৎ বিশাল অট্টালিকা বানিয়েছেন উনি।’’ বিজেপির বাদুড়িয়া পৌর মণ্ডল সভাপতি বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘‘কাটমানি ছাড়া একজন কাউন্সিলরের এত বাড়বাড়ন্ত কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’’

পুরপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুনেছি সুধাংশবাবু বড় বাড়ি করেছেন। কী ভাবে করেছেন, তা বলতে পারব না। তবে এটা ঠিক, উনি অন্যের লাইসেন্সে ঠিকাদারি করেন। মুরগির খামার থেকেও আয় আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE