ত্রাসের নাম করোনা!
আর সেই ভয়ের বৃত্তে এ বার কলিং বেলের বাজা-না বাজাও।
মেদিনীপুর শহরেই কলিং বেল নিয়ে দু’জায়গায় দু’ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেখা গিয়েছে। এক জায়গায় লেখা, ‘দয়া করিয়া কলিং বেল টিপুন।’ আর এক জায়গায় আর্জি, ‘কলিং বেল স্পর্শ করো না। চ্যাঁচাইয়া ডাকুন।’
কলিং বেল টিপে ডাকার বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়া হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা প্রতিরোধে চালু হওয়া আইসোলেশন ওয়ার্ডে। আর কলিংবেল না টিপে চেঁচিয়ে ডাকার বিজ্ঞপ্তি বাড়ির দেওয়ালে সাঁটিয়েছেন মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরাম নগরের এক বাসিন্দা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন ধরনের সাবধানতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এখন। মেদিনীপুর মেডিক্যালের কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে না জানিয়ে যাতে কেউ না ঢুকে পড়েন, সেই জন্যই ওই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনও রোগী এলে আগে কলিং বেল বাজাবেন। তখন স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলে, সব দিক খতিয়ে দেখে তাঁকে ওয়ার্ডে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু মানছেন, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই ওই পদক্ষেপ।’’
সেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতেই ঠিক উল্টো পথে হেঁটেছেন মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরামনগরের বাসিন্দা কাঞ্চন ঘড়া। পেশায় মুহুরি কাঞ্চন বলছিলেন, ‘‘গাঁ-গঞ্জের অনেকে আমার কাছে আসেন। কারও কোনও রোগ থাকতেই পারে। আঙুলের ছোঁয়া থেকে সংক্রমণ শরীরে ঢুকে পড়ার একটা আশঙ্কা থাকে।’’ কাঞ্চন যোগ করছেন, ‘‘আঙুলের স্পর্শ থেকে সংক্রমণ এড়াতে জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা স্থগিত করা হয়েছে। বেলেও তো আঙুলের স্পর্শ পড়ে। তাই এই সাবধানতা।’’
বৃহস্পতিবার ক্ষুদিরামনগরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে বাড়ির দেওয়ালে এই বিজ্ঞপ্তিতে চোখ আটকে গিয়েছিল অভি কোলের। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-ছাত্র অভি বলছিলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তিটা সত্যিই অভিনব। আমি ছবিও তুলে রেখেছি।’’