আহত অরূপ বাগ এবং শৈলেন দাঁ। ছবি অনির্বাণ সেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের পর এ বার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর। ফের এক বার বাম-জাঠার উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হামলায় আহত হয়েছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, বিধায়ক অশোক রাই, জোনাল কমিটির সম্পাদক অরূপ বাগ-সহ একাধিক বাম কর্মী-সমর্থক। তবে শুক্রবারের মতো এ দিনের হামলারও দায় অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
গত ১৪ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হচ্ছে বাম- জাঠা। তারই অঙ্গ হিসাবে বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছে প্রচার পদযাত্রা। আজও বীরভূমের সাড়ে ১০টার সময় প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোমের নেতৃত্বে পদযাত্রা করছিলেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। ছোট ডিবুর অঞ্চলে একদল দুষ্কৃতী পদযাত্রাটির উপর হামলা করে। হামলায় মাথা ফেটে গেছে জোনাল কমিটির সম্পাদক অরূপ বাগের। লাঠির আঘাত লেগেছে রামচন্দ্র ডোম, বিধায়ক অশোক রাই সহ আরও অনেকের।
সিপিএম-এর অভিযোগ, সন্ত্রাস তৈরি করতে পরিকল্পনা মাফিক এই হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। অন্য দিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা জটিল মণ্ডলের দাবি, “এই নেতারা এলাকায় কোনও কাজই করতেন না। তাই বিক্ষুব্ধ সিপিএম কর্মীরাই উত্তেজিত হয়ে এই হামলা চালিয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় বাম জাঠা শুরুর আগে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার সিপিএমের সবং জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে ভেমুয়ার দক্ষিণবাড় থেকে মিছিল হওয়ার কথা ছিল। মিছিল শুরুর আগে পিংলার জলচকে জমায়েত করেছিলেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক কমিটির সদস্য তরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন কর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে জমায়েত হওয়া লোকেদের উপর হামলা চালায়। মারধর করা হয় সিপিএমে কর্মীদের। পা ভাঙে সিপিএমের সবং জোনাল কমিটির সদস্য চিত্ত বেরার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দলের সবং জোনাল কমিটির সম্পাদক চন্দন গুছাইত, জেলা কমিটির সদস্য অমলেশ বসু। তারপরেই আক্রমণকারীরা পালায় বলে অভিযোগ। চিত্তবাবুকে প্রথমে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে মেদিনীপুর প্যারা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অমলেশবাবু বলেন, ‘‘মিছিল শুরুর আগেই তৃণমূলের লোকেরা দলের কর্মীদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। মারধরে বেশ কয়েকজন জখম হয়। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ যদিও জেলা কর্মাধ্যক্ষ তথা স্থানীয় নেতা অমূল্য মাইতির কথায়, ‘‘অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তরুণ মিশ্র সকাল থেকেই আমার সঙ্গে রয়েছে। তাহলে ওঁর বিরুদ্ধে কী ভাবে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি একাধিক বার সহিষ্ণুতার বার্তা দিয়েছেন। বিহার ভোটের ফলের প্রতিক্রিয়ায় হোক বা কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে, সুযোগ পেলেই অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে সওয়াল করতে শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। কিন্তু শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের মিছিলে বাধা দিয়ে সেই অসহিষ্ণুতাতেই অভিযুক্ত হল শাসক।
গত ১৪ নভেম্বর থেকে রাজ্য জু়ড়ে শুরু হয়েছে বাম-জাঠা। নিজের বিধানসভা এলাকায় এ দিন মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সূর্যবাবু। সূর্যবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একপ্রস্ত ধস্তাধস্তিও হয়। পায়ে চোট পান সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়। শেষ পর্যন্ত মিছিল এগোলেও, শাসক দলের ‘মুখে এক, কাজে এক নীতি’র সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy