Advertisement
E-Paper

রাজ্যে তৈরি হবে সাইবার গবেষণা কেন্দ্র

এ রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশ জুড়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধের রমরমা। এই পরিস্থিতিতে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ গবেষণা কেন্দ্র গড়ছে রাজ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৭

এ রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশ জুড়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধের রমরমা। এই পরিস্থিতিতে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ গবেষণা কেন্দ্র গড়ছে রাজ্য।

শুক্রবার বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম-এর একটি অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি-সচিব দেবাশিস সেন জানান, রাজারহাটে এই কেন্দ্র তৈরির বিষয়টি মন্ত্রিসভায় পাশ হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এ ব্যাপারে নীল-নকশা তৈরির কাজ শুরু হবে। তাঁর মতে, সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যেমন সামাজিক ও আইনি নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়, তেমনই তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাইবার নিরাপত্তাকেও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।

মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র কথা ঘোষণা করেছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক কাজ অনলাইনে করার কথা বলছে। দেশজুড়ে বাড়ছে অনলাইন শপিং ও ই-লেনদেন। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কাজ যত বাড়বে ততই সাইবার নিরাপত্তাকে জোরালো করতে হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট এবং অর্থ মন্ত্রকের কৌঁসুলি শিবশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনলাইনে লেনদেনের ক্ষেত্রে যাতে টাকা চুরি না হয় সে ব্যাপারে আরও নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।’’

শুধু সাইবার অপরাধ বা অনলাইন লেনদেন নয়, খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, চুরির মতো ঘটনাতেও তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। যার উদাহরণ দিতে গিয়ে, সম্প্রতি জ্যাকারিয়া স্ট্রিটের রত্ন ব্যবসায়ী মহম্মদ সেলিমের খুনের কিনারার কথা তুলে ধরেন পুলিশের অনেকে। সোমবার রাতের ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের সম্পর্কে প্রথম সূত্র কিন্তু জুগিয়েছিল সেলিমের লুঠ হওয়া মোবাইল। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ওই মোবাইল বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্য কিন্তু মামলার বিচারের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হবে। গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রানাঘাটে সন্ন্যাসিনী ধর্ষণের ক্ষেত্রেও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করেছিলেন সিআইডি-কর্তারা। এই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যন্ত্র-বুদ্ধি বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং’ (সি-ড্যাক)-এর যুগ্ম অধিকর্তা বিশ্বজিৎ সাহা বলছেন, ‘‘মোবাইল-ইন্টারনেটের ব্যবহার যে ভাবে বাড়ছে, তাতে প্রচুর তথ্য ঘেঁটে নির্দিষ্ট জিনিসটি তদন্তকারী অফিসারকে বের করে আনতে হয়। মানুষের পক্ষে সেই কাজ কষ্টসাধ্য, কোনও কোনও ক্ষেত্রে অসম্ভবও। সে ক্ষেত্রে যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে তথ্যের পাহা়ড় থেকে তদন্তের জন্য নির্দিষ্ট জিনিসটি বার করা যেতে পারে।’’ বস্তুত, সি-ড্যাকের তৈরি এমন নানা প্রযুক্তি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরো এবং বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা ব্যবহার করে থাকে। তথ্যপ্রযুক্তি-সচিব জানান, এই যন্ত্রবুদ্ধির বিষয়টি নিয়ে রাজ্যও ভাবছে। কল্যাণীতে ৫০ একর জমির উপরে একটি তথ্যপ্রযুক্তি নগরী তৈরি করা হচ্ছে, যার মূল উদ্দেশ্যই হবে তথ্য বিশ্লেষণের উপযোগী গবেষণা এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবন। তাঁর মতে, শুধু রাজারহাট বা নিউটাউনকে কেন্দ্র করে নয়, জেলা শহরগুলিতেও তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে।

একই সঙ্গে সেখানে যাতে বিশেষজ্ঞরা সর্বক্ষণ থাকতে পারেন, সেই

ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন। দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘প্রাতর্ভ্রমণ হোক বা রাতের পানশালা, যে কোনও সময়েই যাতে বিশেষজ্ঞরা একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন বা আলোচনা করতে পারেন, তেমন পরিকাঠামোই গড়ে তোলা হবে। এর ফলে জেলা শহরগুলিতে কর্মসংস্থানের সুযোগও বা়ড়বে।’’

Cyber Crime Cyber Research Center Kalyani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy