Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Singur

১১ হাজার ভোল্টের ছেঁড়া তার সিঙ্গুরের রাস্তায়, বড় বিপদ থেকে রক্ষা যুবকের তৎপরতায়

সম্প্রতি হাওড়া, উলুবেড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুৎ দফতরের উদাসীনতা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ১৮:১৮
Share: Save:

বড়সড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলার পুণ্যার্থীরা। ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের একটি ছেঁড়া তার পড়েছিল রাস্তায়। যে পথ ধরে হেঁটে শ্রাবণী মেলায় যান ভক্তেরা। ঘটনাচক্রে, সে পথ ধরেই বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় এক যুবক। মূলত, তাঁর তৎপরতায় খবর পেয়ে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তারটি কেটে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন। তবে এই ঘটনায় দেড় ঘণ্টা ধরে বন্ধ থাকে যান চলাচল। গোটা ঘটনায় বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিদ্যুতের ওই তারটি ছিঁড়ে পড়েছিল সিঙ্গুরের রতনপুরের রাস্তায়। রাত তখন ৩টে। তা থেকে আগুন জ্বলছিল। মোটের উপর বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোড সে সময় ফাঁকাই থাকে। তবে তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলা চলার কারণে এই রাস্তা ধরেই বাঁক কাঁধে হেঁটে তারকেশ্বরে যান ভক্তেরা। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার রাতে দাদপুরের হারিটে বিয়েবাড়ি থেকে কামারকুন্ডুতে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন গৌতম ধোলে নামে স্থানীয় এক যুবক। বাইকের আলোয় তিনি দেখতে পান, রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে একটি তার পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে মোটরবাইক থামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। সে সময়ে রতনপুর হয়ে তারকেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন কয়েক জন ভক্ত। বাইকের আলো দেখিয়ে চিৎকার করে তাঁদের থামিয়ে দেন গৌতম। এর পর বিদ্যুৎ দফতরে ফোন করেন। অভিযোগ, অত রাতে কেউ ফোন ধরেননি। ফলে সিঙ্গুর থানায় ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান গৌতম। তিনি বলেন, ‘‘ডিউটি অফিসার বলেন যে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। তবে আমি যেন ওখানেই থাকি।’’

কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশের গাড়ি পৌঁছয়। রাস্তা আটকে বিদ্যুৎ দফতরে খবর দেয় পুলিশ। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর পর ওই তারটি কেটে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন দফতরের কর্মীরা।

রাতের অন্ধকারে রাস্তায় এই তারটি দেখেন স্থানীয় যুবক।

রাতের অন্ধকারে রাস্তায় এই তারটি দেখেন স্থানীয় যুবক। —নিজস্ব চিত্র।

গৌতম জানিয়েছেন, সিঙ্গুরের রতনপুরে অসংখ্য আলুর আড়ত রয়েছে। সেখানে ভোর পর্যন্ত কাজের পর বহু মুটিয়া এই রাস্তা ধরে বাড়ি ফেরেন। ঘটনার কথা শুনে তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘অনেক সময় সাইকেল নিয়ে কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে হয়। কখনও আবার হেঁটেও বাড়ি ফিরি। অন্ধকারে তার দেখতে না পেলে বড় বিপদ হতে পারত।’’

তারকেশ্বরে শ্রাবনী মেলায় যাওয়ার জন্য সারা রাত ধরে বাঁকে করে জল নিয়ে এই পথ ধরেই হেঁটে যান ভক্তেরা। অন্ধকারে এই তারটির সংস্পর্শে এলে বড় দুর্ঘটনা হতে পারত বলেই মনে করেন গৌতম। সিঙ্গুরের বিদ্যুৎ দফতরের এক অস্থায়ী কর্মী বিকাশ মান্নাও সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লোকজন বেশ কম। রাতে মাত্র দু’জন কাজ করি। বিদ্যুৎ চালু অবস্থায় তার ছিঁড়ে পড়ায় যে কোনও ধরনের বড়স়ড় বিপদ হতে পারত। এখানে কোনও গাছও নেই। অথচ তার ছিঁড়ে পড়ে গিয়েছে। ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই ঘটনা ঘটছে।’’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হাওড়া, উলুবেড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুৎ দফতরের উদাসীনতা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। যদিও দফতরের এক শীর্ষকর্তা দাবি, ‘‘এটা আমাদের দেখার কথা নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Singur Electric wire High tension wire tarakeswar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE