আহত এএসআই স্বপন মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
কালী পুজো উপলক্ষে তারস্বরে মাইক বাজাচ্ছিলেন পুজো কমিটির লোকজনেরা। তাতে বাধা দিতে গেলে পুলিশের দিকে বোল্ডার ও ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী-সমর্থককের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে গোঘাটের কাঁঠালি গ্রামের দাসপাড়ার ওই ঘটনা ইটের ঘায়ে জখম হন এক মহিলা কনস্টেবল-সহ ৩ জন পুলিশকর্মী। এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে লক্ষ্মণ রুইদাস নামে এক তৃণমূল নেতা-সহ ৯ জন তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে গোঘাট থানার পুলিশ। আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ৯ জনকে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুজো সংগঠকদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে।” বুধবার ধৃতদের আরামবাগ আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।
ইটের ঘায়ে মাথা ফেটে যাওয়ায় গোঘাট থানার এএসআই স্বপন মণ্ডলকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অপর এএসআই সন্দীপ দে ও মহিলা কনস্টেবল সৌমিতা কাইতির পায়ে চোট লাগে। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁঠালি গ্রামের দাসপাড়ায় কালী পুজো উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মাইক বাজানো হচ্ছিল। রাত ১০টার পর মাইকের আওয়াজ বেড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বেশ কয়েকবার পুজো কমিটির লোকজনের কাছে গিয়ে আওয়াজ কমানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। উল্টে তাঁদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরে গোঘাট থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান বাসিন্দারা।
রাত দেড়টা নাগাদ এক মহিলা কনস্টেবল-সহ পুলিশের গাড়ি সেখানে পৌঁছয়। বুধবার হাসপাতালে শুয়ে স্বপনবাবু বলেন, “তারস্বরে মাইক বাজিয়ে রাস্তার উপর উদ্দাম নাচানাচি করা হচ্ছিল। অন্যদের অসুবিধার কথা জানিয়ে ও বিধিনিষেধের কথা বলে মাইকের শব্দ কমাতে অনুরোধ করি পুজো কমিটির লোকজনকে। কিন্তু ফল হয় উল্টো। অশ্রাব্য গালাগাল করে আমাদের দিকে তেড়ে আসে ওরা। সবাই মদ্যপ ছিল। ওদের ছত্রভঙ্গ করতে মৃদু লাঠি চালাতে হয়েছিল আমাদের। খানিকক্ষণের জন্য গা ঢাকা দেয় ওরা। কিন্তু মিনিট কয়েক পরেই মাইকে ঘোষণা করে দলের সবাইকে লাঠি সোটা নিয়ে আসতে বলে এক জন। তারপরেই আমাদের দিকে বোল্ডার ও আধলা ইট ছুড়তে শুরু করে ওরা। ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হই আমরা।” বিষয়টি থানায় জানান তাঁরা। গোঘাট থানার ওসি প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চার্জও করা হয়। ন’জনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ।
ধৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় স্বীকার করে নিয়েছেন গোঘাট ব্লক তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাল। তাঁর বক্তব্য, “অভিযুক্ত এবং ধৃতেরা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক ঠিকই। তবে ওদের আচরণ দল সমর্থন করে না। পুলিশকে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছি। দলগতভাবেও ওদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy