আবাসনের ঘরের দরজা ভেঙে এক বি টেক ইঞ্জিনিয়ারের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে।
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে উত্তরপাড়ার ধ্রুবেশ চট্টোপাধ্যায় লেনে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম অংশুমান রায় ওরফে শম্ভু (৩০)। তাঁর বাড়ি আদতে বীরভূমের রামপুরহাটে। মদের আসরে ঝগড়াঝাটির জেরেই বন্ধুরা তাঁকে খুন করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। গ্রেফতার করা হয়েছে এক যুবককে। ঘটনার রাতে তিনি নিহত যুবকের সঙ্গেই ছিলেন বলে তদন্তকারী অফিসারদের দাবি। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, “রাতে তিন জন ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। তদন্ত চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন অংশুমান। ধ্রুবেশ চট্টোপাধ্যায় লেনে একটি আবাসনের তিন তলায় তাঁর দিদির ফ্ল্যাট রয়েছে। অংশুমান একাই সেখানে থাকতেন।
পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার রাতে দুই বন্ধু সেখানে আসেন। অনেক রাত পর্যন্ত হইচই শুনতে পান পড়শিরা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা দেখেন, ওই যুবকের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। সেখান থেকে রক্ত গড়িয়ে আসছে। খবর পেয়ে উত্তরপাড়া থানার আইসি অরিজিত্ দাশগুপ্ত এসে দরজা ভেঙে দেহটি উদ্ধার করেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানান, ওই যুবকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন ছিল। সম্ভবত মদের ভাঙা বোতল দিয়ে আঘাত করাতেই এই পরিণতি। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অংশুমানের এক নিকটাত্মীয় উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারই ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ দিন বিকেলে অংশুমানের এক বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার আলমবাজারের বাসিন্দা ওই যুবক দূরশিক্ষায় এমএ পড়ছেন। এ দিন সকালে পুলিশে ফোন করে তিনি জানান, অংশুমানের ফ্ল্যাটের সামনে সকালে গিয়ে দেখেন রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে। ভয় পেয়ে তিনি ফিরে আসেন। পুলিশ ওই যুবককে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, জেরার মুখে ওই যুবক স্বীকার করেছেন, ওই রাতে মদের আসরে গোলমাল থেকেই খুন হয়েছেন অংশুমান। সঙ্গী আরও এক যুবকের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। তদন্তকারীদের দাবি, নিজেকে পুলিশের সন্দেহের আওতার বাইরে রাখতেই অংশুমানের ফ্ল্যটের দরজা বন্ধ থাকার কথা জানান ওই যুবক। পরে অবশ্য পুলিশের জেরার মুখে ভেঙে পড়েন।
অংশুমানের প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই যুবক সকালে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যেতেন। ফিরতেন রাত ৯টা নাগাদ। প্রায়ই ফ্ল্যাটে বন্ধুদের নিয়ে এসে খানাপিনা করতেন। বুধবার রাতেও সে সব হচ্ছিল। পরে অংশুমানকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ফেলে সঙ্গীরা বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে পালায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy