গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলে ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বামদুর্গ। জেলার চারটি আসনে এ বারও দখলে রেখেছে তৃণমূল। এ বারে মোদী হাওয়ায় ভূলুন্ঠিত অবশিষ্ট লালদুর্গ। শুধু বামফ্রন্ট নয়। রাজ্য দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এসউসি জয়নগর ও কুলতলি দু’টি বিধানসভা আসনও এ বার হাতছাড়া হল। গত বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের কাছে কুলতলি হাতছাড়া হয়েছিল। এ বার জয়নগর আসনটিও তাদের হাতছাড়া হল। লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে জয়নগর আসনটি তৃণমূলের দখলে এল।
গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের ঝড়ে বামদের ভোট ৪১ শতাংশে এসে ঠেকেছিল। বিধানসভায় তা নেমে আসে ৩৯ শতাংশে। এ বারে তা দাঁড়িয়েছে ২৯ শতাংশের কাছাকাছি। গত লোকসভা ও বিধানসভায় তৃণমূল জোট প্রায় ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছাড়ার পর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ৪৪ শতাংশ ভোট প্রাপ্তি হয়েছিল। বিজেপির ধাক্কায় তা ৩৯ শতাংশে এসে ঠেকেছে। বিধানসভাভিত্তিক ফলে তেমন কোনও হেরফের হয়নি। উল্টে বাসন্তী ও ক্যানিং (পূর্ব) আসনটি দখলে এসেছে। বিজেপির ধাক্কায় অবশ্য যাদবপুর বিধানসভা আসনটি হাতছাড়া হয়েছে।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “সংখ্যালঘু ও হিন্দু ভোটের একাংশ বামপন্থীদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।” কান্তিবাবুর ব্যাখা, “বিজেপিকে রুখতে সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ শাসক তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। অন্য দিকে বামপন্থীরা সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের সন্ত্রাসের হাত থেকে বাঁচতে তৃতীয় শক্তি হিসাবে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে তারা। সে কারণেই বামফ্রন্টের ভোট ৩৭ শতাংশ থেকে এক ধাক্কায় ২৯ শতাংশে নেমে এসেছে।”
কান্তিবাবুর ব্যাখ্যার সঙ্গে ভোট কাটাকাটির অঙ্কের বিজেপির ভোট শতাংশের হিসাবে বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। লোকসভার বিভিন্ন আসনের বিজেপির ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে এক লাফে বিজেপির ভোটের গড় হার প্রায় ১৭ শতাংশ ছুঁয়েছে। তৃণমূলের ৫ ও বামফ্রন্টের ৮ শতাংশ ভোটের সঙ্গে বিজেপির নিজস্ব সাড়ে ৩ শতাংশ ভোটের যোগফল প্রায় ১৭ শতাংশ ছুঁয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে শুধু বিজেপির ঝড়ে বামফ্রন্টের ভোট কাটাকাটি হয়েছে বলে মনে করছেন না জেলা সিপিএমের একাংশ। সাংগঠনিক দুর্বলতাকেও এ জন্য দায়ী করছেন তাঁদের একাংশ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাঙড়-২ ও ক্যানিং-২ এলাকায় তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল। ফের ওই সব এলাকা থেকে লোকসভা নির্বাচনে সন্ত্রাস সৃষ্টির করে তৃণমূল বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সিপিএম। জেলা সিপিএমের একাংশের ব্যাখ্যা, ওই সব এলাকায় সিপিএম বুথ এজেন্ট বসাতে পারেনি। সে কারণেই তৃণমূল একচ্ছত্র ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে। শুধু মোদী ঝড় নয়। সিপিএমের সাংগঠনিক দুবর্লতাও ওই এলাকায় ভরাডুবির জন্য দায়ী বলে মনে করছেন জেলা সিপিএমের নেতাদের একাংশ। সম্প্রতি সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত নেতা আবদুর রেজ্জাক মোল্লা বলেন, “কম বয়সী লড়াকু ছেলেরা সিপিএমের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তা ছাড়া, নেতারাও শুধু ঘরে বসে বৈঠক করছেন। মাঠে নামছেন না। নেতৃত্বেরও বদল করার প্রয়োজন রয়েছে। নেতৃত্বের কারণেই মানুষ ধীরে ধীরে সিপিএমের পাশ থেকে সরে যাচ্ছে।”
শববাহী গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত ৮, আহত ৫। মৃতদেহ নিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনা। মৃত ৮ যুবক, গুরুতর আহত আরও ৫ জন। শুক্রবার ভোর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নাকাশিপাড়া থানা এলাকার যুগপুর গেট সংলগ্ন অঞ্চলে। মৃতরা সকলেই নাকাশিপাড়ার সবাইনগরের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সবাইনগরের যুবক হানেফ শেখকে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ভর্তি করা হয় শক্তিনগর হাসপাতালে। ভর্তি হওয়ার কয়েকঘণ্টা পরেই মৃত্যু হয় হানেফের। খবর পেয়েই পাড়া থেকে ১৫ জন যুবকের একটি দল রওনা দেয় হাসপাতালে। গভীর রাতে ছোট একটি গাড়ি করে হানেফের মৃতদেহ নিয়ে ফিরছিল তারা। ভোর তিনটে নাগাদ যুগপুরের গেটের কাছে একটি দ্রুতগামী লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় শবদেহবাহী গাড়িটির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy