Advertisement
E-Paper

দম্পতিকে মারধর, গুলি করার হুমকি দিয়ে ডাকাতি বসিরহাটে

ব্যবসায়ী দম্পতি ও তাঁদের সাত বছরের সন্তানকে মারধর করে, গুলি করার হুমকি দিয়ে বেঁধে অবাধে লুঠপাট চালিয়ে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট থানার মালতীপুর স্টেশনের কাছে। পেশায় ইমারতী দ্রব্যের ব্যবসায়ী গৃহকর্তা বাইজিত বকরের দাবি, দুষ্কৃতীরা সোনা-রুপো মিলিয়ে প্রায় ৩০ ভরি অলঙ্কার, তিনটি মোবাইল ফোন, নগদ আট হাজার টাকা, এটিএম কার্ড ও একটি মোটর সাইকেল-সহ কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০৭
ঘরে ছড়িয়ে লুঠপাটের চিহ্ন। ছবি: নির্মল বসু।

ঘরে ছড়িয়ে লুঠপাটের চিহ্ন। ছবি: নির্মল বসু।

ব্যবসায়ী দম্পতি ও তাঁদের সাত বছরের সন্তানকে মারধর করে, গুলি করার হুমকি দিয়ে বেঁধে অবাধে লুঠপাট চালিয়ে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট থানার মালতীপুর স্টেশনের কাছে। পেশায় ইমারতী দ্রব্যের ব্যবসায়ী গৃহকর্তা বাইজিত বকরের দাবি, দুষ্কৃতীরা সোনা-রুপো মিলিয়ে প্রায় ৩০ ভরি অলঙ্কার, তিনটি মোবাইল ফোন, নগদ আট হাজার টাকা, এটিএম কার্ড ও একটি মোটর সাইকেল-সহ কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

মালতীপুর স্টেশনের কাছে উঁচু পাঁচিল ঘেরা দোতলা বাড়িতে পরিবার নিয়ে বাস করেন বাইজিত। বাড়ির একতলায় রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বাইজিতের ভাই বাইকুল্লা কলকাতা পুলিশের কর্মী। তবে ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। বাইজিত পুলিশকে জানান, রবিবার রাত ১টা নাগাদ জনা চারেক দুষ্কৃতী বাড়ির পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে। তার পর সিঁড়ির দরজার তালা ভেঙে দোতলায় ওঠে। সেখানে আর একটি দরজার ছিটকিনি ভেঙে ঘরে ঢোকে। ঘরে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে দেখেন কাপড়ে মুখ ঢাকা চার দুষ্কৃতী। সকলেরই কাছে রিভলভার ও বন্দুক। ঘরের বাইরেও কয়েকজন রয়েছে। ঘরে ঢুকেই দুষ্কৃতীরা তাঁর সাত বছরের ছেলে জিশানের মুখের মধ্যে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে আলমারীর চাবি চায়। ততক্ষণে স্ত্রী বিউটিদেবীও ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন। ঘরের মধ্যে মুখ ঢাকা দুষ্কৃতী ও ছেলের সঙ্গে ওরকম করতে দেখে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই চিৎকার করে উঠলে দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর শুরু করে। এমনকী বন্দুকে বাঁট দিয়েও আঘাত করে। ভয়ে তাঁরা দুষ্কৃতীদের হাতে আলমারীর চাবি তুলে দিলে তারা আলমারী খুলে সব লুঠ করে। এর পরে এটিএম কার্ড নিয়ে তা দিয়ে টাকা তোলার জন্য তারা বাইজিতকে হুমকি দেয়। রাজি না হওয়ায় বন্দুক দিয়ে তাঁকে ফের আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। স্বামীকে মার খেতে দেখে বিউটিদেবী বাঁচাতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁর গালে চড় মারে বলে জানান বিউটিদেবী। তাঁর গা থেকে খুলে নেওয়া হয় সমস্ত অলঙ্কার। এ ভাবে ঘণ্টাখানেক ধরে লুঠপাট চালানোর পরে দুষ্কৃতীরা পাঁচিলের গেটের চাবি ও নীচে রাখা মোটর সাইকেলের চাবি হাতিয়ে নেয়। তারপরে তিনজনের হাত-পা-মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। তারা চলে যাওয়ার পরে বকর পরিবারের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করে।

সোমবার সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল ঘরে আলমারীর দরজা খোলা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গুটিকয়েক জামাকাপড়। বারান্দায় ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে বসে বিউটিদেবী। চোখেমুখে আগের রাতের আতঙ্ক। কাঁদতে কাঁদতে জানালেন, “স্বামীর চিকিৎসার জন্য শনিবার ব্যাঙ্ক থেকে এক লক্ষ টাকা তোলা হয়েছিল। তবে তা বাড়িতে ছিল না। মনে হয় দুষ্কৃতীরা ওই টাকার খবর পেয়েই হানা দিয়েছিল। সর্বস্ব দিয়ে দেওয়ার পরেও ওরা যে ভাবে আমাদের মারধর করেছে তা বলার নয়। পেটে লাথি মারতেও ছাড়েনি। এমনকী ছোট ছেলেটাও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।” বাইজিত বলেন, “এটিএম কার্ড পাওয়ার পরে ওরা আমার কাছে ‘পিন’ নম্বর জানতে চায়। বলতে দেরি করায় আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিলে এটিএমের ‘পিন’ নম্বর বলে দিই। মোটর সাইকেলের চাবিও দিয়ে দিই।”

basirhat robbery
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy