Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

প্রচার জমছে না, হতাশ হুগলির কংগ্রেস কর্মীরা

তৃণমূল এবং সিপিএম পুরো দস্তুর প্রচারে নেমে গিয়েছে সেই কবে। বিজেপি-র কর্মীদেরও প্রচারে জেলায় দেখা যাচ্ছে ইতিউতি। কিন্তু এ বার ভোটের আবহে হুগলি জেলায় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন। এ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের প্রার্থীই ঠিক করে উঠতে পারেননি। প্রার্থী বাছাই নিয়ে কোন্দলে জেরবার কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে দর কষাকষি অব্যাহত।

প্রার্থীর নাম ছাড়াই দেওয়াল লিখন। শ্রীরামপুরে প্রকাশ পালের ছবি।

প্রার্থীর নাম ছাড়াই দেওয়াল লিখন। শ্রীরামপুরে প্রকাশ পালের ছবি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০১:৫২
Share: Save:

তৃণমূল এবং সিপিএম পুরো দস্তুর প্রচারে নেমে গিয়েছে সেই কবে। বিজেপি-র কর্মীদেরও প্রচারে জেলায় দেখা যাচ্ছে ইতিউতি। কিন্তু এ বার ভোটের আবহে হুগলি জেলায় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন। এ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের প্রার্থীই ঠিক করে উঠতে পারেননি। প্রার্থী বাছাই নিয়ে কোন্দলে জেরবার কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে দর কষাকষি অব্যাহত। হুগলিতে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলের সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং আব্দুল মান্নানের বিরোধ এখন প্রকাশ্যে। এই পরিস্থিতিতে অগত্যা দলের কর্মীরা প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখেই তাঁরা দেওয়াল লিখছেন বহু জায়গায়।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের বহু আসনে চর্তুমুখী লড়াইয়ে রীতিমতো জমজমাট। রাজ্যের অন্যত্র যখন এই ছবি, তখন হুগলিতে এখনও যুযুধান তৃণমূল এবং সিপিএমই। বিজেপি হুগলির দু’টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও প্রচারে এখনও সেই অর্থে অনুপস্থিত। আর কংগ্রেস কার্যত থেকেও নেই।

জেলায় বিচ্ছিন্ন ভাবে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় কংগ্রেস নেতৃত্ব কিছুটা নড়াচড়া করলেও সাংগঠনিক ভাবে এখনও অত্যন্ত দুর্বল। এর আগে দিলীপ নাথকে সরিয়ে জেলা সভাপতির পদে নতুন মুখ নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তাতেও দলের সাংগঠিক কাজে সে ভাবে কোনও হেরফের চোখে পড়েনি। এই আবহে জেলার কংগ্রেস প্রার্থীর নামই চূড়ান্ত করতে না পারায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বলেই সাধারণ কর্মীরা মনে করছেন। প্রার্থী নাম এখনও ঠিক করতে না পারায় প্রচারে দেরি হওয়ায় দল ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে? সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন জেলায় দলের বর্ষীয়ান নেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করব না।”

দলের প্রবীন নেতা প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করলেও কিন্তু মুখ খুলতে শুরু করেছেন কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস কর্মী বলেন, “দলের নেতাদের দেখেই তো কর্মীরা শিখবেন। কিন্তু তাঁরা এমনই শৃঙ্খলা দেখাছেন যে, দল প্রার্থীই ঘোষণা করতে পারছে না। আমাদের দলের পক্ষে কী ভাল কিছু করা সম্ভব এই পরিস্থিতিতে?” উল্লেখ্য, হুগলি লোকসভায় কংগ্রেস নেতৃত্ব যে প্রার্থীকে ঠিক করেছেন তাতে আপত্তি করেন আব্দুল মান্নান। দলের বাছাই করা প্রার্থীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে প্রাথমিক ভাবে তিনি নির্বাচনে লড়বেন না বলেই ঘোষণা করেন। এখন দেখার, বর্ষীয়ান নেতা নিজের জেদ শেষ পর্যন্ত কতটা বজায় রাখেন। এ দিকে, শ্রীরামপুর আসনে মান্নানকে প্রার্থী ধরে নিয়ে আগেই শুরু হয়েছে গিয়েছে পোস্টার, ব্যানার লেখার কাজ।

অন্য দলগুলি প্রচারে পুরোদস্তুর বেরিয়ে যাওয়ায় প্রার্থীর নাম ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় কর্মীরা মনোবল হারাচ্ছেন বলেই মনে করেন জেলায় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ নাথ। তিনি বলেন, “এতে সময় চলে যাচ্ছে। কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন বিষয়টি ঝুলে রয়েছে।” জেলার আর এক কংগ্রেস নেতা প্রীতম ঘোষও মনে করেন, দ্রুত জেলায় দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের জেলায় তৃতীয় দফার ভোট বলে তবু কিছুটা বাঁচোয়া। তা না হলে তো একেবারেই সময় পাওয়া যেত না। অনেক দিন গিয়েছে, এ বার প্রার্থী তালিকা না বের হলে যিনিই প্রার্থী হোন, তিনি অসুবিধায় পড়ে যাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

goutam bandopadhyay hooghly loksabha election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE