Advertisement
E-Paper

‘মাস্টারমশাই’ নেই, শোকস্তব্ধ বসিরহাট

রাজনীতির আঙিনায় পরস্পর উল্টোদিকের মেরুতে থাকলেও মাস্টার মশাইয়ের মৃত্যুতে মিলেমিশে এক হয়ে গেল ডান-বাম। সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি, কে ছিল না তাঁর শেষ যাত্রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৪৫
নারায়ণ দাস মুখোপাধ্যায়।

নারায়ণ দাস মুখোপাধ্যায়।

রাজনীতির আঙিনায় পরস্পর উল্টোদিকের মেরুতে থাকলেও মাস্টার মশাইয়ের মৃত্যুতে মিলেমিশে এক হয়ে গেল ডান-বাম। সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি, কে ছিল না তাঁর শেষ যাত্রায়।

১৯৭৭ সালে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে সিপিএম প্রার্থী হিসাবে বিধানসভায় নির্বাচিত হন। তার পর থেকে আর হারের মুখ দেখতে হয়নি নারায়ণ দাস মুখোপাধ্যায়কে। রাজনীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন বসিরহাট হাইস্কুলে। বিধায়কের থেকেও এলাকায় মাস্টারমশাই হিসাবেই তাঁর সর্বাধিক পরিচিতি ছিল। এ দিন তাই বিধায়ককে শ্রদ্ধা জানাতে যেমন হাজির ছিলেন রাজনৈতিক দলের নেতারা, তেমনই প্রিয় মাস্টারমশাইকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। প্রবীণ বিধায়কের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিশ আলি, বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা (রনি), তৃণমূল নেতা নারায়ণ গোস্বামী, শিবু বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেছিলেন বিজেপির রমেশ সরকার, শ্রীনিবাস দাস, বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই প্রার্থী নুরুল হুদা, অজয় চক্রবর্তী, কংগ্রেসের অসিত মজুমদার, সিপিএমের অমিতাভ বসু, বনগাঁ লোকসভার সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাস, নিরঞ্জন সাহা, মৃণাল চক্রবর্তী, নারায়ণ মণ্ডল প্রমুুখ।

মরদেহে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড়।—নিজস্ব চিত্র।

ইদ্রিশ আলি বলেন, “ভাল মানুষ বলেই নারায়ণদা দীর্ঘদিন বিধায়ক ছিলেন। তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য নারায়ণ মণ্ডলের কথায়, “ওঁর মৃত্যুতে দল এবং বসিরহাট এক জনপ্রিয় নেতাকে হারাল।” অজয় চক্রবর্তী বলেন, “আমার রাজনৈতিক হাতেখড়ি ওঁর কাছেই। এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়লাম।’’ বিজেপির শ্রীনিবাস দাসের মন্তব্য, “মাস্টারমশায় হিসাবে বসিরহাটে তাঁর বিশেষ জায়গা ছিল। সে জন্যই দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে প্রিয় ছিলেন।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) অসিত মজুমদার বলেন, “নারায়ণদা কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, এ দিন তা বোঝা গিয়েছে। আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম।”

১৯৩৩ সালের ১ মার্চ বাংলাদেশের সাতক্ষীরার টাউনশ্রীপুর গ্রামে জন্ম। পরে চলে আসেন বসিরহাটে। ১৯৫২ সালে হাওড়ার জুটমিলে কাজে যোগদান। সেখানে বাম শ্রমিক আন্দোলনে জড়িয়ে কারাবাস। জেল থেকে বেরিয়ে বসিরহাটে এসে শুরু করেন শিক্ষকতা। ১৯৬৬ সালে খাদ্য আন্দোলনে ফের কারাবাস। ১৯৭৭ সাল থেকে টানা বিধায়ক। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়াতেঅজয় চক্রবর্তীও নিজের কেন্দ্রেও অদ্বিতীয় তিনি। জনপ্রিয় মাস্টারমশাইকে হারতে দেননি তাঁর গুণগ্রাহীরা। টানা ৪৬ বছর বসিরহাট পুরসভার কাউন্সিলার ছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান।

এদিন মুনসেফপাড়ার বাড়িতে মৃতদেহ আনা হলে ভেঙে পড়ে জনতা। সেখান থেকে মিছিল করে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট হাইস্কুলে। সেখান থেকে পুরসভা গেলে মালা দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান পুরপ্রধান। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার অফিস, বসিরহাট কলেজ-সহ কয়েকটি জায়গায় ঘুরে মৃতদেহ রাখা হয় টাউন হল মাঠে। সন্ধ্যায় মিছিল করে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় শ্মশানে।

basirhat ex cpm mla narayan das mukhopadhay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy