বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও পরে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গণধোলাই দিল তরুণীর বাড়ির লোকজন। গুরুতর জখম অবস্থায় ফারুক হোসেন গাজি নামে ওই যুবককে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পাল্টা ফারুকের বাড়ির লোকজনও ওই তরুণীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বেধে যায় বসিরহাটের ঝিনকার গাছারআটি গ্রামে। দুই বাড়ির তরফেই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়। বসিরহাট থানার আইসি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “উভয়পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। শুক্রবার বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে ওই তরুণীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে ঝিনকা গাছারআটি গ্রামের ওই তরুণীর সঙ্গে দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা ফারুক হোসেন গাজির পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। উভয়ের সম্পর্কের কথাও জানতেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে। পুলিশের কাছে ওই তরুণী লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, আলাপ-পরিচয় থেকে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর ফারুক তাঁকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার সহবাসও করেছে ফারুক। সম্প্রতি তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিলে ফারুক বেঁকে বসে। এ নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসলেও বিয়েতে ফারুককে রাজি করানো যায়নি। এর পরে বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ চরমে পৌঁছয়।
তরুণী থানায় অভিযোগ করেছেন, “গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে ফারুক বাড়িতে এসে আমার সঙ্গে জোর করে সহবাসের চেষ্টা করে। তখন ফের ওকে বিয়ের কথা বললে আমাকে খুনের হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে চিৎকার শুরু করি।” তরুণীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় ফারুক। এ বার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিবাদ বেধে যায়। ফারুককে মারধরের জেরে সে হাসপাতালে ভর্তি হলে অবস্থা আরও জটিল হয়। বদলা নিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ ফারুকের বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন তরুণীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। শুক্রবার বসিরহাট থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে তরুণী জানান, বিয়ের নামে তাঁকে ধর্ষণ করাই উদ্দেশ্য ছিল ফারুকের। এর প্রতিবাদ করায় ফারুকের বাড়ির লোকজন তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। তাঁদের পরিবারের কয়েক লক্ষ টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে।
তবে পুলিশের কাছে পাল্টা অভিযোগে ফারুকের বাবা রফিকুল গাজির দাবি, “ছেলেকে যে ভাবে মারধর করা হয়েছে, তাতে ওর অবস্থা আশঙ্কাজনক। সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফারুকের নামে বদনাম রটানো হচ্ছে।”