Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

একই পরিবারের চার জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার জনাইয়ে

ঘরের চালের দু’টি বাঁশ থেকে গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল এক দম্পতি এবং তাঁদের দুই ছেলেমেয়ের দেহ। বৃহস্পতিবার সকালে হুগলির জনাইয়ের বাসিন্দা রবীন পণ্ডিত (৪৩), তাঁর স্ত্রী কল্পনাদেবী (৩৭), মেয়ে সুস্মিতা (২১) এবং ছেলে সুশোভনের (১৮) দেহ ওই অবস্থায় দেখে চমকে গিয়েছিলেন পড়শিরা। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শোকার্ত আত্মীয়-পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শোকার্ত আত্মীয়-পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ১৯:৫৭
Share: Save:

ঘরের চালের দু’টি বাঁশ থেকে গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল এক দম্পতি এবং তাঁদের দুই ছেলেমেয়ের দেহ।

বৃহস্পতিবার সকালে হুগলির জনাইয়ের বাসিন্দা রবীন পণ্ডিত (৪৩), তাঁর স্ত্রী কল্পনাদেবী (৩৭), মেয়ে সুস্মিতা (২১) এবং ছেলে সুশোভনের (১৮) দেহ ওই অবস্থায় দেখে চমকে গিয়েছিলেন পড়শিরা। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশের অনুমান, চার জনেই আত্মঘাতী হয়েছেন।

কী কারণে এমন ঘটনা?

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সুস্মিতার সঙ্গে তাঁদের এক নিকটাত্মীয় যুবকের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তা মানতে পারেননি রবীনবাবুরা। সম্মানহানির ভয়ে তাঁরা আত্মঘাতী হন বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, সুশোভনের বাঁ হাতে পেন দিয়ে লেখায় ওই নিকটাত্মীয়কেই তাঁদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, গোটা ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রবিনবাবুদের ওই আত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। সুস্মিতার ওই সম্পর্কের কথা জানিয়েছেন পড়শিরাও। দুপুরে চণ্ডীত‌লা থানায় দাঁড়িয়ে রবীনবাবুর ভাই বাবলু পণ্ডিত বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে আমাদের ওই আত্মীয়ের জন্যই দাদা-বৌদি আর ভাইপো-ভাইঝির এমন পরিণতি হল। কী বলব মাথায় ঢুকছে না।’’

আরও পড়ুন: নকশালবাড়ির ড্যামেজ কন্ট্রোলে ভবানীপুরের বস্তিতে ছুটলেন লকেট

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জনাইয়ের মালিপাড়ার বাসিন্দা রবীনবাবু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। সুস্মিতা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। সুশোভন একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। এ দিন সকালে ওই পরিবারের কাউকে বেরোতে না-দেখে পড়শিদের সন্দেহ হয়। বেলা ১১টা নাগাদ ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া না-পেয়ে তাঁরা ওই বাড়ির ভেজানো দরজা ঠেলতেই টালির চালের বাঁশ থেকে চার জনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। সুস্মিতার সঙ্গে ওই নিকটাত্মীয়ের সম্পর্ক নিয়ে কিছু দিন ধরেই পরিবারে অশান্তি চলছিল। রবীনবাবু ইদানীং কাজেও যাচ্ছিলেন না। বুধবার কাছেই একটি পৈতের নিমন্ত্রণ থাকলেও বাড়ির কেউই যান‌নি। তবে, ওই দিন সকালে রবীনবাবু চণ্ডীতলারই বাকসা পঞ্চায়েতের খোঁড়াগড়ে ওই আত্মীয়ের বাড়িতে যান। মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেন। দু’পক্ষের বচসাও হয়।

ওই যুবকের মায়ের দাবি, ‘‘আমার ছেলে অমন কাজ করতেই পারে না। কেন ছেলের বিরুদ্ধে ওঁরা এমন কথা বলল, বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Family Members Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE