Advertisement
E-Paper

আইনের লড়াই নাকি আন্দোলন, দ্বন্দ্বে মোর্চা

জয়রাম জয়ললিতা না মদন মিত্র, কার পথে হাঁটবেন বিমল গুরুঙ্গ? এই প্রশ্ন যেন ঘুরপাক খেল দার্জিলিং পাহাড়ে। মোর্চার অন্দরের খবর, দলের অধিকাংশ নেতাই জয়ললিতার পথে হাঁটার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁরা চান, গুরুঙ্গ পদত্যাগ করে, তাঁর একান্ত আস্থাভাজন কাউকে জিটিএ চিফের পদে বসিয়ে, আইনি লড়াই করুন। অন্য পক্ষের দাবি, মদন যদি জেলে থেকেও মন্ত্রী থাকতে পারেন, তা হলে গুরুঙ্গই বা কেন গ্রেফতার হলেই জিটিএ চিফের পদ ছাড়বেন?

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০৩:৪৫
বাম আমলে মহাকরণ থেকে ফেরার পথে বাগডোগরায় বিমল গুরুঙ্গ।—ফাইল চিত্র।

বাম আমলে মহাকরণ থেকে ফেরার পথে বাগডোগরায় বিমল গুরুঙ্গ।—ফাইল চিত্র।

জয়রাম জয়ললিতা না মদন মিত্র, কার পথে হাঁটবেন বিমল গুরুঙ্গ? এই প্রশ্ন যেন ঘুরপাক খেল দার্জিলিং পাহাড়ে। মোর্চার অন্দরের খবর, দলের অধিকাংশ নেতাই জয়ললিতার পথে হাঁটার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁরা চান, গুরুঙ্গ পদত্যাগ করে, তাঁর একান্ত আস্থাভাজন কাউকে জিটিএ চিফের পদে বসিয়ে, আইনি লড়াই করুন। অন্য পক্ষের দাবি, মদন যদি জেলে থেকেও মন্ত্রী থাকতে পারেন, তা হলে গুরুঙ্গই বা কেন গ্রেফতার হলেই জিটিএ চিফের পদ ছাড়বেন?

আজ, রবিবার দার্জিলিঙের ভানু ভবনে বৈঠক করার কথা জিটিএ-র। গুরুঙ্গ সরে গেলে দল ও জিটিএ-র দায়িত্ব কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে ওই বৈঠকে চার্জশিট-প্রাপ্ত কোনও জিটিএ সদস্য থাকবেন না। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, যাঁদের হাতে রাশ তুলে দেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে এগিয়ে কার্শিয়াঙের নির্বাচিত সদস্য অনিত থাপা। কারণ, দলের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক পরিচালনার ব্যাপারে অনিতবাবুর উপরেই গুরুঙ্গ অত্যন্ত নির্ভর করেন।

মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক জ্যোতি কুমার রাই বলেন, ‘‘আইন ও বিচার বিভাগকে শ্রদ্ধা করি। কখনও চ্যালেঞ্জ করতে চাই না। মানুষের রায়কেও অমর্যাদা করব না। আইনি লড়াই লড়েই আমরা দেখিয়ে দেব কী ভাবে আমাদের মিথ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’’ তাঁর মতো অনেক নেতাই চান, রাজনৈতিক সংঘাতে না গিয়ে আইনের পথে যাক দল।

কিন্তু মোর্চার অন্দরে আর এক পক্ষ চাইছে, সমঝোতা নয়, পথে নামা হোক। গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেলের (জিএলপি) কিছু সদস্য জানান, মন্ত্রী মদন মিত্রকে গ্রেফতারের পর রাজ্যের এক মন্ত্রীর নেতৃত্বে যদি সিবিআই দফতরে অবস্থান-বিক্ষোভ হতে পারে, তা হলে তাঁরাও করতে পারেন। জিএলপি-র সুরে সুর মিলিয়ে মোর্চার কালিম্পঙের এক শীর্ষ নেতার প্রশ্ন, মদনবাবু যদি জেলে থেকেও ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী থাকতে পারেন, তা হলে অন্য কেউ জেলে গেলে পদ ছাড়তে হবে কেন? প্রয়োজনে জেলে বসে আইনি লড়াই ও জিটিএ চালানোর প্রস্তুতি নিতে হবে গুরুঙ্গদের।

কিন্তু পাহাড়ের জনতার মনোভাব আরও কিছু দিন যাচাই করতে চাইছেন মোর্চার শীর্ষ নেতারা। কারণ, তামাঙ্গ হত্যার পরে গোটা পাহাড় গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিল। গুরুঙ্গ দার্জিলিঙে ঢুকতে বাধা পেয়েছিলেন। জনতার ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে বিরোধীরা বাড়তি অক্সিজেন পাক, সেটাও গুরুঙ্গ চাইছেন না। তিনি কট্টরপন্থীদের বোঝাচ্ছেন, আন্দোলনে পর্যটন ধাক্কা খেলে জনসমর্থন কমবে। তাই মোর্চার তরফে এ দিনও বলা হয়েছে, ‘‘পাহাড়ে শান্তি আছে ও থাকবে। লড়াই আইনি পথে হবে।’’

সরকারি সূত্রের খবর, বর্ষার প্রায় এসেই গিয়েছে পাহাড়ে। ধসপ্রবণ এলাকায় সতর্কতা জারি হয়েছে। জিটিএ অকেজো হয়ে গেলে ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে সমস্যা হতে পারে। সে জন্যও জিটিএ-কে সচল রাখার কথা ভাবতে হচ্ছে গুরুঙ্গদের। জিটিএ-এর নির্বাচিত ৪৫জন সদস্য, সবই মোর্চার। তাঁদের মধ্যে গুরুঙ্গ-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এক জন সদস্য সঞ্জয় থুলুঙ্গ অস্ত্র পাচারের মামলায় ফেরার। কাজেই গুরুঙ্গরা যদি আপাতত পদ থেকে সরেন, তা হলেও ৩৫ জন সদস্যের সুবাদে জিটিএ চালানোর জায়গায় থাকবে মোর্চাই। তাই গুরুঙ্গের নির্দেশেই আজ ৩৫ জন সদস্য বৈঠকে বসছেন।

FIR GJM Gorkha Janmukti Morcha siliguri Madan Mitra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy