Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চাকরি বাঁচল সব সিভিক পুলিশকর্মীর

বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরের পর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে সিভিক পুলিশ নিয়োগের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে কিছুটা স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরের পর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে সিভিক পুলিশ নিয়োগের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে কিছুটা স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার তাদের রায়ে রাজ্যের সব সিভিক পুলিশকর্মীর চাকরিই বহাল রেখেছে।

রাজ্যের বিভিন্ন থানা এলাকায় এক লক্ষ ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক সিভিক পুলিশকর্মী আছেন। উচ্চ আদালত তাঁদের চাকরি বহাল রাখায় শুধু সরকার নয়, স্বস্তি পেলেন ওই সব কর্মী এবং তাঁদের পরিবারও। সরকারি আইনজীবী শিবির জানাচ্ছে, বছরখানেক আগে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বাঁকুড়ার বারিকুল ও সারেঙ্গা থানার সিভিক পুলিশকর্মীদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের রায়ে বহাল থাকছে সেই কর্মীদের চাকরিও।

২০১৩ সালে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় এক লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক পুলিশ নিয়োগ করে তৃণমূল সরকার। সেই নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল না বলে অভিযোগ তুলে বারিকুল ও সারেঙ্গা থানার কয়েক জন যুবক হাইকোর্টে মামলা করেন। আবেদনে ওই যুবকেরা বলেন, ২০১৩ সালে তাঁরাও সিভিক পুলিশ নিয়োগের ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন। কিন্তু নিয়োগে স্বচ্ছতা না-থাকায় তাঁরা চাকরি পাননি।

গত বছর মে মাসে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রায়ে জানিয়ে দেন, সিভিক পুলিশ নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটিই ত্রুটিপূর্ণ। বারিকুল ও সারেঙ্গা থানার সিভিক পুলিশকর্মীদের তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। বাকি সব থানার সিভিক পুলিশের কাজের সময়সীমা বেঁধে দেন ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় একই সঙ্গে সরকারকে নির্দেশ দেন, এর পর থেকে সিভিক পুলিশ নিয়োগ করতে হলে যথাযথ পদ্ধতিতে অর্থাৎ বিধিবদ্ধ পরীক্ষার (৮০ নম্বরের ‘সাবজেক্টিভ’ এবং ২০ নম্বরের ‘অবজেক্টিভ’ প্রশ্ন) মাধ্যমে করতে হবে। নিয়োগের পদ্ধতি কী হবে, সেই বিষয়ে সুপারিশ করবে তিন জনের একটি কমিটি।

নিয়োগ বাতিলের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়েছে, ওই স্বেচ্ছাসেবকেরা মূলত ট্রাফিক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের চাকরিও স্থায়ী নয়। এই ধরনের স্বেচ্ছাসেবকদের অস্থায়ী নিয়োগে বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ করার কোনও প্রয়োজন নেই।

যাঁরা বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদালতে মূল মামলাটি দায়ের করেছিলেন, তাঁদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এ দিন জানান, ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ উল্লেখ করে জানিয়েছে, এই ধরনের নিয়োগে আদালতের হস্তক্ষেপ নিষ্প্রয়োজন।

রায়ে আশ্বস্ত স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, রাজ্যের বিভিন্ন থানায় কর্মরত সিভিক পুলিশকর্মীদের নিয়োগ বাতিল হলে তাঁরা তো কর্মহীন হতেনই। সেই সঙ্গে তাঁদের পরিবারগুলিও পড়ত অনিশ্চয়তার মধ্যে। ডিভিশন বেঞ্চ এতগুলি পরিবারের কথা ভেবেই এমন নির্দেশ দিয়েছে বলে মনে করেন ওই কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Civic police Job
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE