Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
অভিযোগ আরএসএস যোগ

দার্জিলিঙে রাজ্যপালের অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক

শৈলশহরে প্রথম সফরে গিয়ে সোমবার ভগিনী নিবেদিতার প্রয়াণ দিবসে একটি বেসরকারি ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তা ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। পাহাড়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিরোধী দলের নেতাদের অনেকেরই অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) একটি শাখা সংগঠনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল যোগ দিয়েছেন। যদিও সংগঠকদের দাবি, জিটিএ-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি বেসরকারি ট্রাস্ট অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল। এর সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক নেই।

দার্জিলিঙের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং আরএসএস নেত্রী শান্তাক্কা। রয়েছেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও। ছবি: রবিন রাই

দার্জিলিঙের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং আরএসএস নেত্রী শান্তাক্কা। রয়েছেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াও। ছবি: রবিন রাই

রেজা প্রধান
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

শৈলশহরে প্রথম সফরে গিয়ে সোমবার ভগিনী নিবেদিতার প্রয়াণ দিবসে একটি বেসরকারি ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তা ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

পাহাড়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিরোধী দলের নেতাদের অনেকেরই অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) একটি শাখা সংগঠনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল যোগ দিয়েছেন। যদিও সংগঠকদের দাবি, জিটিএ-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি বেসরকারি ট্রাস্ট অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল। এর সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক নেই।

এ দিন ভগিনী নিবেদিতার ১০৩তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং কলকাতার লক্ষ্মীবাই কেলকার ট্রাস্ট দার্জিলিঙে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে সঙ্ঘের মহিলা শাখা রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির সর্বভারতীয় সভানেত্রী তথা লক্ষ্মীবাই ট্রাস্টের মুখ্য পথপ্রদর্শক শান্তাক্কা-ও ছিলেন।

ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই প্রথম পাহাড় সফর। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সিস্টার নিবেদিতা শিশু কন্যা-সহ সমাজের একটি অংশের জন্য নানা কাজ করেছেন। আমাদের দায়িত্ব এই ধরনের কাজকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে তরুণ প্রজন্মকে পথ দেখানো।”

পাহাড়ের রাজনৈতিক দল সিপিআরএম-এর নেতৃত্বের দাবি, রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতি আরএসএস প্রভাবিত একটি মহিলা সংগঠন। আরএসএসের মতোই একটি সমান্তরাল হিন্দু ভাবাদর্শের সংগঠন এটি। সিপিআরএমের মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রী বলেন, “জিটিএ যে সংগঠনের সঙ্গে একযোগে অনুষ্ঠান করেছে, তা আদতে আরএসএসের একটি মুখ। গোটা দেশের মতো দার্জিলিঙের সংগঠনটি নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। জিটিএ-কে সামনে রেখে এ দিন গোটা অনুষ্ঠানটা করেছে আরএসএস।”

যদিও উদ্যোক্তাদের তরফে বিজেপির রাজ্য সংগঠক সম্পাদক অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটি জিটিএ এবং লক্ষ্মীবাই ট্রাস্টের অনুষ্ঠান। আয়োজনে আরএসএসের কোনও ভূমিকা নেই। তবে আমরা অনেকেই উপস্থিত ছিলাম। ভগিনী নিবেদিতার প্রয়াণ দিবসে আরএসএস-বিজেপির তরফে শ্রদ্ধাও জানানো যাবে না?”

আরএসএস-যোগের কথা অস্বীকার করা হয়েছে জিটিএ-র তরফেও। জিটিএ সদস্য জ্যোতিকুমার রাই বলেন, “লক্ষ্মীবাই ট্রাস্টটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাত্র। ওই সংগঠনে আরএসএসের কোনও অনুমোদন নেই। তাই তাদের সঙ্গে যৌথ ভাবে আমরা অনুষ্ঠানটি করেছি।” রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির সর্বভারতীয় সভানেত্রীর উপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কোনও সংগঠন বা মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত থাকতেই পারেন। এতে বলার কী আছে? এটা নতুন বিষয় নয়।”

দার্জিলিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চে এ দিন অনুষ্ঠানটি হয়েছে। রাজ্যপাল, শান্তাক্কা, আরএসএসের পূর্বাঞ্চলের নেতা অদ্বৈত দত্ত ছাড়াও ছিলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া ও জিটিএ সদস্যরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE