সাবধান: কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গার্ডরেল। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার মাঝ বরাবর নীল-সাদা ডিভাইডার। কিছু দূর অন্তর নীল রঙের লোহার গার্ডরেল। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সরু রাস্তায় এই গার্ডরেল বসানোর উদ্দেশ্য ছিল মূলত গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু আখেরে এর ফল হয়েছে উল্টো। দিনে ট্র্যাফিক পুলিশের নজরদারিতে এগুলি যান-শৃঙ্খলা বাড়ালেও রাতে এই সব গার্ডরেলই হয়ে উঠছে দুর্ঘটনার কারণ।
পুলিশের রেকর্ডই বলছে, গত চার মাসে ব্যারাকপুর, কাঁকিনাড়া, শ্যামনগরের বিভিন্ন রাস্তায় বসানো গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে জখম হয়েছেন ২০ জনেরও বেশি মোটরবাইক আরোহী। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে একটি ডিভাইডার ভেঙে দিয়েছে ট্রেলার। চালকদের অভিযোগ, রাতে এক্সপ্রেসওয়েতে আলো নেই। বিশেষত কল্যাণী-ব্যারাকপুর এক্সপ্রেসওয়ের একটা বিরাট অংশে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। বি টি রোড ও ঘোষপাড়া রোডের বহু জায়গায় আলো জ্বলে না। উল্টো দিকের গাড়ির আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ায় ডিভাইডার বুঝতে পারা যায় না বহু জায়গায়। গার্ডরেলগুলিও নজরে পড়ে না। রাতে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময়ে এই ডিভাইডার বা গার্ডরেলে ধাক্কা লেগে গাড়ির ক্ষতিও হয়েছে কয়েক বার।
ব্যারাকপুর কমিশনারেট তৈরি হওয়ার পরে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকেই প্রশাসনের মুখ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্যস্ত রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গার্ডরেল বসানোর কাজও শুরু হয় তখন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সেই গার্ডরেলই এখন দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নীল-সাদা রঙের গার্ডরেলে জোরালো রিফ্লেক্টর না থাকায় ফাঁকা রাস্তায় গাড়ির গতি বেশি থাকলেও দূর থেকে বোঝা যায় না।
কমিশনারেটের কর্তারা মানছেন, শিল্পাঞ্চলের রাস্তাগুলিতে ২৪ ঘণ্টা গাড়ির যে চাপ থাকে, তাতে রাস্তা চওড়া না হলে এই গার্ডরেল বা ডিভাইডারের কারণে দুর্ঘটনা এড়ানো মুশকিল। কিন্তু মাস তিনেক আগে ফের কয়েকটি জায়গায় নতুন করে ডিভাইডার ও গার্ডরেল বসানো হয়। এর মধ্যে ব্যারাকপুর-বারাসত রোড ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগস্থল বা মসজিদ মোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লেন ভাগ করার ফলে মাঝেমধ্যে প্রবল যানজট হয়। পুলিশের দাবি, চৌমাথাগুলিতে বেপরোয়া গাড়ি রুখতেই এই ব্যবস্থা।
যে সব জায়গায় এ ভাবে লেন ভাগ করা হয়েছে, তার আশপাশে একাধিক স্কুল ও পানশালা থাকায় দিনের বেলা যেমন পড়ুয়াদের রাস্তা পেরোতে হিমশিম খেতে হয়, তেমনই রাতে নেশাগ্রস্ত তরুণ-তরুণীরা দু’চাকায় সওয়ার হয়ে দুর্ঘটনায় পড়েন। যদিও কী ভাবে দুর্ঘটনা কমানো যাবে, তার সদুত্তর দিতে পারেননি পুলিশকর্তারা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সিভিক পুলিশ নেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে বহু জায়গায় অরক্ষিত চৌমাথা নিয়ন্ত্রণে ভরসা গার্ডরেলগুলি। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘গার্ডরেল ও ডিভাইডারগুলিতে দুর্ঘটনা এড়াতে কী করা যায়, আমরা ভাবছি। ট্র্যাফিক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy