Advertisement
E-Paper

যদি বোমা থাকে, শঙ্কিত মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ইস্তক কখনও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি তাঁকে। কেন্দ্র সতর্ক করা সত্ত্বেও জেড প্লাস নিরাপত্তার বেষ্টনীতে নিজেকে আটকাতে চান না। বুলেটপ্রুফ গাড়ি চড়েন না। পাইলট নেন না। প্রায়শই ছবিটবি তুলতে হুটহাট নেমে পড়েন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৬

মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ইস্তক কখনও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি তাঁকে। কেন্দ্র সতর্ক করা সত্ত্বেও জেড প্লাস নিরাপত্তার বেষ্টনীতে নিজেকে আটকাতে চান না। বুলেটপ্রুফ গাড়ি চড়েন না। পাইলট নেন না। প্রায়শই ছবিটবি তুলতে হুটহাট নেমে পড়েন।

তা হলে বুধবার জলপাইগুড়িতে হঠাৎ কী হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? ‘স্পোর্টস ভিলেজ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আচমকা কেন তিনি বললেন, “আমি থাকাকালীন কোনও একটা ঘটনা ঘটলে কী হবে? কেউ যদি বিস্ফোরক রেখে যায়, কংগ্রেস-সিপিএম দায়িত্ব নেবে তো?”

মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর পুলিশ-প্রশাসন তো বটেই, দলের অন্দরেও শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। মুখ্যমন্ত্রীকে জেড প্লাস নিরাপত্তা মেনে চলতে অনুরোধ করা হবে কি না, তা নিয়েও জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। তবে তার চেয়েও যে প্রশ্নটা কেউ কেউ তুলেছেন তা হল মুখ্যমন্ত্রিত্বের সাড়ে তিন বছরের মাথায় মমতা কি ইঙ্গিত দিলেন যে, নিজের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন?

প্রসঙ্গের অবতারণা স্থানীয় একটি স্কুলে পুলিশবাহিনীর থাকা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য জলপাইগুড়িতে যাওয়া বাহিনীর একাংশ রয়েছে ওই স্কুলটিতে। ফলে দু’টি শ্রেণির বেশ কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে। এ নিয়ে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বুধবার সেই বিষয়েই মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে বলেন, “আপনার বাড়িতে অতিথি আসে, আপনি সাধ্যমতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেন। পুলিশ বলে কি মানুষ নয়?” মমতা দাবি করেন, তিনি পরীক্ষা চলাকালীন স্কুল নিয়ে নেওয়ার বিপক্ষে। পরীক্ষা পিছিয়ে যাক, সেটাও তিনি চান না।

তা হলে কেন স্কুলে ঠাঁই নিল পুলিশ? মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “পুলিশকেও তো থাকার জায়গা দিতে হবে। পুলিশ কি রাস্তায় থাকবে? আমি থাকার সময়ে যদি বড় কোনও ঘটনা ঘটে, তখন তো পুলিশকে পৌঁছতে হবে।” এই সময়েই বিস্ফোরক রাখা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন, তখন সেখানে উপস্থিত রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিজি (উপকূল) রাজ কানোজিয়া, উত্তরবঙ্গের আইজি-সহ অনেক শীর্ষ কর্তাই। কেন মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তা নিয়ে এতটা উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত হয়ে পড়লেন, সে বিষয়ে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের একাংশ নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেন। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতেও মুখ্যমন্ত্রী অসমের ‘কোবরা’ জঙ্গি গোষ্ঠীর সক্রিয় হওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন। পাহাড়ে অস্ত্র সরবরাহের চেষ্টার অভিযোগে অসমে দু’জনকে বমাল গ্রেফতারের প্রসঙ্গও ছুঁয়ে গিয়েছিলেন। আর ইদানীং উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে প্রভাব বাড়াতে মাওবাদীদের সক্রিয় হওয়ার ব্যাপারেও সম্প্রতি রিপোর্ট পৌঁছেছে নবান্নে।

তবে কে জানত, মুখ্যমন্ত্রী নিজের সভায় বিস্ফোরক নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করার পর সত্যি সত্যিই বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে তাঁর অস্থায়ী আস্তানার অদূরে! জলপাইগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী যেখানে রয়েছেন, সেই কিং সাহেবের ঘাটের পূর্ত দফতরের বাংলোর অদূরে ব্যাগ-সহ একটি ‘দাবিদারহীন’ সাইকেলকে সভার পর পড়ে থাকতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল এলাকা ঘিরে ফেলে। পরীক্ষা করে ব্যাগটিতে বিপজ্জনক কিছু না মেলায় স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ে সকলের। শেষে জানা যায়, ব্যাগটি এক সিভিক ভলান্টিয়ারের। মুখ্যমন্ত্রীর সভার নিরাপত্তার ডিউটিতেই ছিলেন তিনি!

bomb scared mamata bandyopadhyay state news online state news Jalpaiguri Mamata Banerjee Mamata Banerjee's rally Heavy security fear bomb west bengal CM TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy