ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজা। পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু বৃহস্পতিবার কমিশনের সেই সুপারিশ মেনেই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে বলা যায় কমিশনের তদন্ত রিপোর্টে ‘নিরপেক্ষতা’ উলঙ্ঘন হয়নি। তারা শুধুমাত্র অভিযোগগুলি নথিভুক্ত করেছিল। তার প্রেক্ষিতেই এই রায়।
রাজ্য ঘুরে ভোট পরবর্তী হিংসার তথ্য তুলে এনে রিপোর্ট তৈরি করে কমিশন। সেই রিপোর্টে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিল তারা। সেই সঙ্গে বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারধরের ক্ষেত্রে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আদালতের রায় কার্যত কমিশনের সেই সুপারিশকেই মান্যতা দিল।
তিন আইপিএস অফিসার সুমনবালা সাহু, সৌমেন মিত্র ও রণবীর কুমারকে নিয়ে সিট গঠন করেছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে হবে এই তদন্ত। ছ’সপ্তাহের মধ্যে সিবিআই ও সিট দু’টি তদন্তের রিপোর্টই আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয়, আদালত সিটকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া সিটের তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না রাজ্য। অর্থাৎ তদন্ত চলাকালীন ওই অফিসারদের বদলি বা অন্য কোনও পদে বসাতে পারবে না রাজ্য। তা করতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এমনকি এই তদন্ত চলাকালীন তাঁদের অন্য সব কাজের ভার থেকে লাঘব করার কথাও বলা হয়েছে। নির্দেশে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে সিবিআই ও সিটকে যথাযথ সাহায্য করতে হবে রাজ্যকে। সব মিলিয়ে হাই কোর্টের এই রায় রাজ্যের পক্ষে বেশ অস্বস্তিকর বলাই যায়।