Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bappi Lahiri

Bappi Lahiri: বাপি বাড়ি যা... সেই সময় স্লোগান দিয়েছিলেন কর্মীরা, ‘যুদ্ধের ইতিহাস’ ঘেঁটে বললেন কল্যাণ

• বাপ্পি লাহিড়ির বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ের ইতিহাস তুলে ধরেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

• বাপ্পি লাহিড়িকে নিয়ে স্মৃতিচারণায় তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট সুবীর নাগ।

বাপ্পি লাহিড়ির স্মৃতিচারণায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাপ্পি লাহিড়ির স্মৃতিচারণায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:১৩
Share: Save:

যিনি সুর বাঁধেন তিনি ভোটের ময়দানেও লড়েন। যেমন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হুগলির শ্রীরামপুর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে লড়াইয়ে নেমেছিলেন শিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বাপ্পির প্রয়াণে কল্যাণ ব্যথিত হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাপ্পি লাহিড়ি এক জন বিখ্যাত গায়ক এবং সুরকার। আমি চিরকালই ওঁকে শ্রদ্ধা করতাম, ভালবাসতাম। ঘটনাচক্রে উনি ২০১৪ সালে আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন সেটা অন্য কথা। কিন্তু এর বাইরে ওঁর বিপুল জনপ্রিয়তা ছিল। উনি দেশের রত্ন হিসাবে গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ সালের পর ওঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। দেখা হলে কিছু কথা বলতাম। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’’

আট বছর আগে ঘটে যাওয়া শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের সেই ‘যুদ্ধের ইতিহাস’ ফের এক বার টেনে আনছেন কল্যাণ। তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘ওঁর অনেক গানের বাণী নির্বাচনের সময় আমি নিজেও বলেছিলাম। সংবাদমাধ্যম যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘বাপি লাহিড়ি আপনার বিরুদ্ধে প্রার্থী আপনার কী প্রতিক্রিয়া?’ তখন আমি ওঁর গানেই জবাব দিয়েছিলাম, ‘বোম্বাই সে আয়া মেরা দোস্ত, দোস্ত কো সালাম করো। দিন মে খায়ো পিয়ো, রাত মে আরাম করো।’ এ ছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনের কথা আমার মনে আছে। উনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ফিরছিলেন আর আমি জমা দিতে ঢুকছিলাম। সেই সময় বিজেপি-র কর্মীরা স্লোগান দিয়েছিলেন। আমাদের কর্মীরাও ‘বাপি বাড়ি যা’ স্লোগান দিয়েছিল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা বই ‘বাপি বাড়ি যা’। আমরা সেই বইয়ের সূত্র ধরেই স্লোগানটা দিয়েছিলাম। পরে সেটা নিয়ে উনি অনেক জায়গায় দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। আমি বলেছিলাম, ‘এতে রাগ-অভিমানের কিছু নেই। এটা রসিকতা।’

তবে কল্যাণের মতে, ‘‘ওঁদের মতো নাম করা শিল্পী, খেলোয়াড়দের রাজনীতিতে না আসাই ভাল। কারণ ওঁরা সর্বজনের। কিন্তু রাজনীতি করলে সর্বজনের হওয়া যায় না। ওঁরা দেশের সম্পদ।’’

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাপ্পি লাহিড়ি।

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাপ্পি লাহিড়ি। নিজস্ব চিত্র।

আট বছর আগে সেই লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছেন হুগলির বিজেপি নেতা সুবীর নাগও। সেই সময় বাপ্পির নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন তিনি। সুবীরের কথায়, ‘‘অত বড়মাপের মানুষকে এত কাছ থেকে পাওয়া সত্যিই আমাদের কাছে সৌভাগ্যের ব্যাপার ছিল। ওঁর অনেক স্মৃতি আছেন। উনি বেশি রাতে ঘুমোতে যেতেন। সব রাজনৈতিক কাজ সেরে রাত রাত ৯টা সাড়ে ৯টা নাগাদ বাপিদা পরিবার নিয়ে আমাদের সঙ্গে আড্ডায় বসতেন।’’ স্মৃতি থেকে সুবীরের মন্তব্য, ‘‘সেই সময় বাপ্পি’দা শ্রীরামপুরের একটি হোটেলে থাকতেন। ওঁর এত কাছাকাছি এসে আমার মনে হয়েছে, উনি এত অলঙ্কার পরলেও ওঁর অহঙ্কার ছিল না। একেবারে মাটির মানুষ ছিলেন। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর কফি খেতে খুব ভালবাসতেন। সারা দিন ভোট প্রচার করতেন হুডখোলা জিপে। ওঁর চলাফেরায় অসুবিধা হত। তাই গাড়িতে ওঠানামার জন্য ফোল্ডিং সিঁড়ি রাখা হত। বলেছিলেন, জিতলে উদীয়মান শিল্পীদের জন্য অ্যাকাডেমি করবেন। এমনকি শ্রীরামপুরে গঙ্গার ধারে থাকার জন্য উনি জায়গাও দেখেছিলেন। কিম্তু হেরে গিয়ে উনি ভেঙে পড়েছিলেন। ওঁকে না জেতাতে পারার আক্ষেপ আমাদেরও সারা জীবনে যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bappi Lahiri BJP TMC Kalyan Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE