Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Potato

পঞ্জাব নির্ভরতা কাটাতে উন্নত আলু বীজ তৈরিতে জোর রাজ্যের

প্রতি বছরই আলু বীজের দাম বেড়ে চলেছে। গত বছর আলু বীজের ৫০ কেজির বস্তার দাম ছিল আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা। এ বার সেটা কিনতে হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়।

প্রতি বছর বাড়ছে আলু চাষের খরচ। নিজস্ব চিত্র।

প্রতি বছর বাড়ছে আলু চাষের খরচ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হুগলি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ২১:১২
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গের আলু চাষ মূলত পঞ্জাবের বীজ নির্ভর। রাজ্যে যে পরিমাণ আলুর বীজ ব্যবহার হয় তার প্রায় সবটাই আসে পঞ্জাব থেকে। আর এই আলুর বীজ নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ বহুদিনের। এই ছবিটাই এবার বদলাতে চাইছে রাজ্যের কৃষি দফতর। এবার রাজ্যের কৃষি দফতরই এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।

প্রতি বছরই আলু বীজের দাম বেড়ে চলেছে। গত বছর আলু বীজের ৫০ কেজির বস্তার দাম ছিল আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা। এ বার সেটা কিনতে হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে লাগে এমন ৩ বস্তা আলু। বীজের দাম বাড়ায় চাষের খরচও এক ধাক্কায় বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ হাজার টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর খরচ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও কৃষকরা লাভ কতটা পাবেন তার নিশ্চয়তা নেই। কৃষকদের লাভ নিশ্চিত করতে তাই বীজের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।

রাজ্যের কৃষি দফতর উদ্যোগে হুগলি, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং নদিয়া উচ্চ ফলনশীল বীজ উৎপাদনে নেমেছে। রাজ্যের মধ্যে হুগলি জেলায় সব থেকে বেশি আলু উৎপাদন হয়। এই জেলার পোলবা এবং সিঙ্গুরে সরকারি খামারে সেই বীজ তৈরি করা হচ্ছে। ধনিয়াখালি, হরিপাল, পুরশুড়া এবং খানাকুল ১ নম্বর ব্লকে কৃষকদের জমিতেই কৃষি দফতর এই উন্নত প্রযুক্তির আলু বীজ উৎপাদন করছে।

হুগলি জেলা কৃষি উপঅধিকর্তা জয়ন্ত পাড়ুই জানিয়েছেন, সরকার চাইছে আলু চাষের জন্য কৃষকদের যেন পঞ্জাবের বীজের উপর নির্ভর না করতে হয়। বীজের দাম কমলে চাষের খরচ কমবে। রোগ পোকার আক্রমণ আটকাতে পলি শেডে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে বীজ তৈরি করছেন কৃষি দফতরের প্রযুক্তিবিদরা। আগামী ৪ বছরের মধ্যে রাজ্যের মোট প্রয়োজনের ৫০ শতাংশ আলু বীজ যাতে রাজ্যেই উত্পাদন করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে এগনো হচ্ছে। এমনকি এই বীজ থেকে আলু চাষের ক্ষেত্রে যাতে সার এবং কিটনাশকের প্রয়োজন কম হয় তার দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এই ভাবেও চাষের খরচ কমানোর চেষ্টা হবে।

হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “প্রতি বছর পাঞ্জাবের বীজ নিয়ে একটা খেলা চলে। ইচ্ছে মতো দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। সেটা বন্ধ হবে। যে সব জায়গায় ভাল আলু চাষ হয় সেখানে এই হাইটেক বীজ তৈরি হবে।”

পোলবার আলু চাষী সইফুল মণ্ডল বলেন, “আলু বীজের জন্য প্রতি বছর ভুগতে হয়। যে লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে আলু চাষ শুরু করি তার থেকে খরচ অনেকটা বেড়ে যায়। রাজ্যেই আলু বীজ তৈরি হলে কম দামে তা পাওয়া যাবে।” পোলবার নারায়ণপাড়া গ্রামের আলু চাষী ভীম চোমর বলেন, “পঞ্জাবের আলু বীজ দিয়ে চাষ করলে এক বিঘায় ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। তাই সরকার যদি আলু বীজ তৈরি করে তাহলে তো ভালই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Potato Hoogly Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE