Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Howrah

করোনায় নজিরবিহীন পরিষেবা, শ্রমজীবি হাসপাতালকে পুরস্কার দিল স্বাস্থ্য কমিশন

করোনা চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালকে করা জরিমানা থেকেই এই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হুগলি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:২৩
Share: Save:

করোনা অতিমারির মোকাবিলার ভাল কাজ করার জন্য বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালকে ১ লক্ষ আর্থিক পুরস্কার দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। করোনা চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালকে করা জরিমানা থেকেই এই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চলতি সপ্তাহে।

শ্রমজীবী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। শনিবার শ্রমজীবী হাসপাতালের সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, ‘‘আমরা শুরু থেকেই করোনা রুগীদের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সাহচার্যের বিষয়টিতে জোর দিতে চেয়েছিলাম। এর ফলে আমরা অধিকাংশ রুগীকেই সন্তুষ্ট করতে পেরেছিলাম। যা আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। কিন্তু স্বাস্থ্য কমিশন যেভাবে শ্রমজীবী হাসপাতালকে স্বীকৃতি দিলেন তাতে আমরা আপ্লুত, কৃতজ্ঞ।’’

গত ২২ জুন ২০২০ সন্ধ্যায় সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলেন কলকাতার বাসিন্দা রঞ্জিতকুমার সুর। দুপুরে ওই হাসপাতালেই ডাক্তার দেখিয়ে টেস্ট করেন। বিকেলে ডাক্তার নিজেই ফোন করে বলেন, ‘আপনি পজিটিভ। ভর্তি হয়ে যান।’ কিন্তু সন্ধ্যায় ভর্তি হতে গেলে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয় রঞ্জিতের।

বেসরকারি ওই কর্পোরেট হাসপাতালে রোগী বা বাড়ির লোক কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে সরকারি নিয়মের কথা বলা হলে হাসপাতালের তরফে বলা হয়, ‘বেসরকারি হাসপাতালে সরকারি নিয়ম চলে না। সিট নেই হবে না এটাই ফাইনাল।’ রুগীর পরিজনেরা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বাউন্সার টাইপের লোক ভেতরে ঘুরে এসে বলে, আমিই ডাক্তার। আমি বলছি সিট নেই। আর কারও সাথে কথা বলে লাভ নেই’।

এর পর একটি সরকারি হাসপাতালে গেলে বলা হয়, স্বাস্থ্য ভবন থেকে লিখিয়ে আনতে হবে। এক পরিজনের কথায়, ‘‘রোগীকে গাড়িতে বসিয়ে স্বাস্থ্যভবনে গেলে তারা রিপোর্ট ঘেঁটে বলল, ‘কই আপনাদের রোগীর নাম নেই। আবার ওই বেসরকারি হাসপাতালে চলে যান। বলুন, আইসিএমআর ওয়েবসাইটে রোগীর রিপোর্ট আপলোড করতে। আপলোড হলে তারপর আসুন’। ফের বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হয়। রোগী রাতে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।’’

ওই কর্পোরেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়। তারপর তিন দফা শুনানি হয়। দুই দফা ভার্চুয়াল। এক দফা প্রত্যক্ষ হাজিরার ভিত্তিতে। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেন কমিশন সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ হয়। অবশেষে গত সোমবার (০১/০২ /২০২১) এই মামলার রায় হয় রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে।

কমিশন তাঁর রায়ে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করে। দুই লক্ষ টাকা রোগীকে দিতে বলেন এবং একলক্ষ টাকা বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালকে দিতে বলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE