Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪
TMC

TMC and BJP: প্রয়োজনে নন্দীগ্রামের মতো লড়ব, সিঙ্গুরে বললেন শুভেন্দু, শিশিরের নাম করে খোঁচা কুণালের

শুভেন্দুর মন্তব্যের পরেই পাল্টা ময়দানে নামে জোড়াফুল শিবির। শুভেন্দু-পিতা শিশির অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করেছেন কুণাল ঘোষ।

শুভেন্দু অধিকারীর আক্রমণের জবাব দিলেন কুণাল ঘোষ।

শুভেন্দু অধিকারীর আক্রমণের জবাব দিলেন কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:৩৫
Share: Save:

সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের কৃষি নীতি নিয়ে মঙ্গলবার একের পর এক প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে, কৃষকদের দাবি আদায়ে প্রয়োজনে তিনি নন্দীগ্রামের মতো লড়াই করবেন বলেও মন্তব্য করেছেন। ঘটনাচক্রে শুভেন্দু নন্দীগ্রামেরই বিধায়ক। তৃণমূলের জমি আন্দোলনের ইতিহাস জড়িয়ে থাকা সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে তিনি রাজ্যের কৃষি নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের পরেই পাল্টা ময়দানে নামে জোড়াফুল শিবির। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এবং আত্মহত্যা করেছেন এমন কৃষকদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য, কৃষকদের উপযুক্ত দামে সার ও বীজ, সেচের জন্য ভর্তুকিতে বিদ্যুৎ দেওয়া, সার ও বীজের কালোবাজারি বন্ধ— এমনই কয়েকটি দাবি তুলে মঙ্গলবার সিঙ্গুরের সিংহের ভেড়ি এলাকায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেস হাইওয়ের পাশে ধর্নায় বসেছে বিজেপি। শিয়রে কলকাতার পুরভোট। ফলে মহানগরীর রাজপথ সরগরম হয়ে উঠেছে ভোট প্রচারে। আবার মঙ্গলবারই গোয়ার পানজিম থেকে বিজেপি বিরোধিতার সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে সেই মঙ্গলবারেই এক সময় জমি আন্দোলনে আন্দোলিত হয়ে ওঠা সিঙ্গুর থেকে রাজ্যের কৃষি নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। কলকাতা, পানজিম এবং সিঙ্গুর— এই ত্রিভুজের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু রাজ্যে সার এবং বীজের কালোবাজারির অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যের কৃষকরা ধান, আলু এবং পান চাষ এবং উদ্যানপালনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।

শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফসল বিমা যোজনা চালু করেছেন। মোদীজি ফার্স্ট পার্টির হাতে শস্যবিমার ভার দিয়েছিলেন। সেটা পাল্টে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে থার্ড পার্টির হাতে শস্যবিমার ভার দিয়েছেন। সেই বেসরকারি সংস্থাগুলি দু’বছরে এক জন কৃষকের হাতেও বিমার টাকা দেয়নি।’’ কৃষকদের দাবিপূরণে পরবর্তী দলীয় কর্মসূচির কথা তুলে ধরে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘এর পর কিসান মোর্চা প্রতি জেলায় আন্দোলন করবে। এর পর নবান্ন অভিযান হবে।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি যে ভাবে নন্দীগ্রামে মাঠে দাঁড়িয়ে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী লড়াইতে ছিলাম, কৃষকদের নিয়ে প্রয়োজন হলে, আমার দল নির্দেশ দিলে আমি এখানে দাঁড়িয়ে থেকেও লড়াই, সংগ্রাম সংগঠিত করব।’’ গ্রামে গ্রামে ‘কৃষক বাঁচাও কমিটি’ তৈরির নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে কর্মীদের উৎসাহ দিতে তাঁর বার্তা, ‘‘অধিকার আদায় করে নিতে হবে। রাজ্য বিজেপি অন্নদাতা কৃষকদের পাশে আছে।’’

নতুন কৃষি আইন নিয়ে কৃষক বিক্ষোভের মুখে পড়েছে মোদী সরকার। যার জেরে সেই আইন প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে। সে কথা তুলে ধরেই তৃণমূলের মত, বিজেপি ‘কৃষক বিরোধী’ তকমা মুছতে মরিয়া। তাই কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিতে সিঙ্গুরের মতো জায়গাকে পদ্মশিবির বেছে নিয়েছে বলেও মনে করছে জোড়াফুল শিবির। এই আবহে শুভেন্দুর মন্তব্যের পরেই আসরে নামে তৃণমূল। কুণালের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘যে প্রধানমন্ত্রীকে কৃষকদের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে হয়, সেই দলের মুখে কৃষকের কথা মানায় না।’’ একই সঙ্গে শুভেন্দুকে বিঁধে তিনি বলেন, ‘‘মমতার কৃষক-নীতি যদি ভ্রান্ত হয়, তা হলে তার উপর ভর করে শুভেন্দু এবং তাঁর বাবা রাজনৈতিক কেরিয়ার তৈরি করলেন কেন? এত দিন পর বিবেক জাগল?’’ শুভেন্দুকে ‘পেগাসাস অধিকারী’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কুণাল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE