মাঠে চলছে প্র্যাকটিস। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।
মাঠ ঢেকে আছে সবুজ ঘাসে। মাঠের চার পাশে লোহার ফেন্সিং। সাইড লাইনের ধারে দু’টো রিজার্ভ বেঞ্চ। এক পাশে কংক্রিটের ছোট স্টেডিয়াম। আইএফএ-র প্রথম ডিভিশন, সুপার ডিভিশন, ট্রেডস কাপ, জেলা লিগের খেলা হয় নিয়মিত। হাওড়ার মাকড়দহ ইউনিয়ন ক্লাবের এই মাঠে বিভিন্ন সময়ে প্র্যাকটিস করে গিয়েছেন ব্যারেটো, ডগলাস, ওডাফা, সনি নর্ডির মতো নামী বিদেশি ফুটবলাররা। কিন্তু এতদিন এখানে কলকাতা লিগের প্রিমিয়র ডিভিশনের কোনও খেলাই দেওয়া হত না। এ বার সেই দাবি তুললেন ক্লাব কর্তারা। ইতিমধ্যেই তাঁরা আইএফএ-র কাছে এ ব্যাপারে দরবার করেছেন। আইএফএ বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মাকড়দহের ওই মাঠটি আমরা লিজে নিয়েছি। ওখানে প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলা দেওয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।” আইএফএ সূত্রে খবর, প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলা দেওয়ার মত উপযুক্ত নিরাপত্তা, জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা, স্টেডিয়াম, টয়লেট, সাজঘর-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো ঠিক থাকলে আগামী মরসুমেই এই মাঠে ‘পরীক্ষামূলক’ ভাবে প্রিমিয়ার ডিভিশনের ছোট দলের খেলা দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠে ফেন্সিং ও রিজার্ভ বেঞ্চের কাজ করতে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। পুরো টাকাটাই দেওয়া হয়েছে ক্লাব তহবিল থেকে। ২০০৭ সালে জনস্বাস্থ্য-কারিগরি দফতর মাঠে পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেয়। ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উৎপল কড়ুরী বলেন, “২০১৩-’১৪ মরসুমে চার্চিল ব্রাদার্স, পুনে এফসি, মুম্বই এফসি বাংলাদেশের ধানমন্ডি ক্লাব আমাদের মাঠে অনুশীলন করে গিয়েছে।”
এই মাঠে ফুটবলারদের অনুশীলন করান মোহনবাগান ও মহমেডানের প্রাক্তন ফুটবলার আশিস পাল চৌধুরী। তাঁর দাবি, “কলকাতার মাঠে দু’টো ছোট দলের খেলা হলে মাঠ প্রায় ফাঁকা থাকে। কিন্তু এখানে খেলা হলে মাঠে লোক আসবে। এতে ফুটবলের ভাল।” মাঠে বর্তমানে অনুশীলন করেন কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশনের দল সার্দান সমিতির ফুটবলার রাহুল জায়সবাল। তাঁর পরামর্শ, “মাঠ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। তবে সাজঘরকে অনেক উন্নত করতে হবে।” এই মাঠে বহু ম্যাচে রেফারিং করেছেন প্রাক্তন ফিফা রেফারি কালিদাস মুখোপাধ্যায় দাবি, “এখানে প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলা দিতে ফুটবল আইনের দিক দিয়ে কোনও সমস্যা নেই।”
হাওড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলার জন্য মাঠে খেলোয়াড়দের জন্য দু’টি ও রেফারির জন্য একটি সাজঘর, লকার ও আধুনিক টয়লেট অবশ্যই দরকার। ওই মাঠে এই পরিকাঠামো তৈরি করতে সময় লাগবে। তবে আপাতত যে পরিকাঠামো রয়েছে তার কিছুটা অদলবদল করে প্রিমিয়ার ডিভিশনের খেলা দেওয়াই যায়।”
এখন দেখার, এলাকার ফুটবলপ্রেমীদের স্বপ্ন পূরণ হয় কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy