রিষড়া, দাদপুরের পর এ বার চণ্ডীতলা। দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন এক ব্যবসায়ী। রবিবার সকালের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ শ্রীরামপুরের চণ্ডীতলার কাপাসহাড়িয়া এলাকায় খুন হন ওই ব্যবসায়ী। মৃতের নাম তপন ওরফে খোকন পান। বছর ছেচল্লিশের ওই ব্যবসায়ী সিঙ্গুর থানার অন্তর্গত বড়া এলাকার বাগবাড়ির বাসিন্দা। তিনি দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন। তপনবাবু দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কাছে গ়জিয়ে ওঠা হোটেলগুলিতে চড়া সুদে টাকা ধার দিতেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসাও করতেন।
নিহতের পরিবারের দাবি, বড়া তেলিয়ার মোড়ে তপনের চাউমিন-এগরোলের দোকান রয়েছে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পরিবার সূত্রে খবর, অন্য দিনের মতোই এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ তপনবাবু মোটরবাইকে চেপে বাড়ি থেকে বের হন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের অ্যাপ্রোচ রোড ধরে তিনি চণ্ডীতলার দিকে যাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের অ্যাপ্রোচ রোডে একটি মোটরবাইকে চড়ে আসে জনা দু’য়েক দুষ্কৃতী। দু’জনেই মাথায় হেলমেট ছিল। খুব কাছ থেকে খোকনবাবুকে লক্ষ করে তিনটি গুলি চালিয়ে চম্পট দেয় তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। দুষ্কৃতীরা বাইক ছুটিয়ে ডানকুনির দিকে চলে যায়। খবর পেয়ে এসডিপিও (শ্রীরামপুর) সুবিমল পাল এবং চণ্ডীতলা থানার ওসি তাপস সিংহ ঘটনাস্থলে যান। তপনবাবুকে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, খোকনবাবুর বুকে ও পেটে গুলি লেগেছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত শুক্রবারই হুগলির দাদপুরে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ওই দিনই এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে গুলির লড়াই চলে। দুষ্কৃতীদের দাপট বাড়ায় তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত জেলার মানুষজন।
এ দিন ঘটনাস্থলে যান শ্রীরামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল। কী কারণে খোকনবাবুর উপর গুলি চালানো হল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, কী কারণে খুন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, এর পিছনে পুরনো ব্যবসায়িক শত্রুতাও থাকতে পারে। তদন্তে নেমে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে চণ্ডীতলা থানার পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী মাধবীদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামীর কোনও শত্রু ছিল না। কেন যে এ ভাবে খুন করা হল বুঝতে পারছি না। পুলিশ খুনিদের খুঁজে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’ তৃণমূলের বড়া অঞ্চল সভাপতি শৈল ঘোষ বলেন, ‘‘তপন খুবই ভাল লোক ছিলেন। আমাদের দল করতেন। কারা ওঁকে খুন করল, পুলিশ তদন্ত করে তা বের করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy