Advertisement
E-Paper

ভাঙা বাঁধে আশঙ্কার প্রহর গুনছে হুগলিও

বন্যার আতঙ্কে ভুগছে হুগলি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৮:১০
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বর্ষা এসেছে। হুগলিতে অবশ্য বন্যা প্রতিরোধে হেলদোল নেই প্রশাসনের।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ— কোথাও লকগেট ভাঙা, কোথাও বা নদী ভাঙন গিলছে গ্রামকে। কোথাও গত বছরের বন্যায় ধুয়ে যাওয়া বাঁধের একাংশে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।বাকি থেকে গিয়েছে অন্য অংশের কাজ। তার ফলে বাঁধের যে দিকটা হাঁ-করা সে দিকের বাসিন্দারা ভুগছেন আতঙ্ক।

যদিও হুগলির জেলাশাসক মাস দেড়েক আগে বন্যা প্রতিরোধে বৈঠক করেছিলেন সেচ ও জেলা পরিষদের কর্তাদের নিয়ে। কিন্তু জেলা পরিষদ কর্তাদের একাংশই বলছেন, কাজে গতি নেই।

তাঁদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে দেড় মাস আগে। কিন্তু এখনও জেলায় পঞ্চায়েত গঠন হয়নি। কারণ পুরনো পঞ্চায়েত আগামী অগস্ট মাস পর্যন্ত কাজ চালাবে। তাই বন্যা প্রতিরোধের কাজেও গা-ছাড়া মনোভাব। বিদায়ীরা পঞ্চায়েত সদস্যরা কাজ করতে গড়িমসি করছেন। আবার নব নির্বাচিতরাও দায়িত্ব পাননি বলে কাজে আগ্রহ নেই।

কিন্তু জেলার পরিস্থিতি মোটেও ভাল নয়। গত বছর বর্ষায় হুগলির চারটি মহকুমার বিভিন্ন অংশ ব্যানার কবলে পড়েছিল। দ্বারকেশ্বরের বাঁধ উপচে জল ঢুকেছিল আরামবাগ শহরে। নদীবাঁধ ভেঙেছিল জেলার অন্য বেশ কিছু অংশে। ঘটেছিল প্রাণহানিও।

তাই বন্যা কবলিত অঞ্চলের গ্রামবাসীরা ভেবেছিলেন সময় থাকতেই বাঁধ মেরামতে নামবে পঞ্চায়েতগুলি। কিন্তু সেই উদ্যোগ প্রায় চোখেই পড়েনি। জাঙ্গিপাড়া ব্লকের রসিদপুর পঞ্চায়েতের রণের খালে লকগেট ভেঙে গিয়েছিল গত বার। সেই লকগেটে সারানোর কাজে এ পর্যন্ত হাত পড়েনি। ফলে বিলাসপুর ও আত্রা গ্রামের মানুষের আতঙ্কিত।

বিলাসপুর গ্রামের বাসিন্দা রমেশ পাত্র বলেন, ‘‘ওই লকগেট না সারানো হয়নি। দু’টি গ্রামের মানুষের চাষের জমি, বসতবাড়ি— সবই ভেসে যেতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। অনেক বার আবেদন করেছি প্রশাসনের কাছে। লাভ হয়নি।’’

আবার দামোদরের ভাঙনে বিপর্যস্ত জাঙ্গিপাড়া ব্লকের রাজবলহাট, সেনপুর, সিংটি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। রাজবলহাটের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘শুনেছি গতবার পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে বাঁধের ভাঙন সারানো হয়েছে। কিন্তু কী লাভ হল? একই জায়গায় হাওড়ায় নদীর ওপারে রিং-বাঁধ তৈরি হল। এ পারে সেই একই মানের কাজ হল না কেন?’’

বলাগড়ের ছবিটাও একই রকম। গঙ্গার চর এলাকা চরকৃষ্ণবাটী-সহ বির্স্তীণ এলাকায় ভাঙনের সমস্যার স্থায়ী সমাধান নেই। ওই এলাকার এক পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির আর্থিক ক্ষমতা সীমিত। তাই শুধু প্রকল্প তৈরি করে লাভ নেই। প্রয়োগের ক্ষমতাই যদি না থাকে তাহলে পঞ্চায়েত কী করবে?’’

হুগলির ১৮টি ব্লকের মধ্যে আরামবাগের ছ’টিই বন্যাপ্রবণ। ওই মহকুমায় মুণ্ডেশ্বরী, দামোদর, কানানদী এবং দ্বারকেশ্বর নদ ছাড়াও রয়েছে বহু শাখানদী। গত বার দ্বারকেশ্বরে উপছে আরামবাগ শহরেই জল ঢোকে। ভাঙা বাঁধের কাজে একাংশে হয়েছে সেখানে।

কিন্তু দৌলতপুর ও কালীপুর পর্যন্ত কাজ হলেও তারপর থেকে আরামবাগ লাগোয়া কুমারগঞ্জ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় সেই কাজ হয়নি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। তার ফলে এ বারের বর্ষা ফের ভাবাচ্ছে মানুষকে।

যদিও জেলায় সেচ দফতরের মুণ্ডেশ্বরীর এসডিও সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘জেলায় সেচ দফতর তালিকা ধরে কাজ করেছে। ‘ফ্লাড ওয়াল’ তৈরির কাজ এখন অনেকাংশে শেষ। বকেয়া কিছু কাজ চলছে।’’ তাঁর দাবি, বড় বড় যে সব কাজ বাকি রয়েছে, তা বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

Rain Monsoon Dam Flood Hooghly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy