একবারে পারল না ওরা। পরপর দশ-পনেরো বার আমার মাথায় মারল, তারপর রক্তে ভেসে গেল শরীর। ততক্ষণ আঁকড়ে ছিলাম ব্যাগটা— আমার সর্বস্ব। শেষ পর্যন্ত আর পারলাম না। ব্যাগ ছিনিয়ে দৌড়ে গিয়ে গলির মুখে একটা মোটর বাইকে উঠে পালাল তিনটে ছেলে। কতই বা বয়স হবে! বছর পঁচিশ কি তারও কম। গলিতে একটা আলোও ছিল না। তাই মুখ দেখতে পাইনি। আর সেই সুযোগটাই নিল ওরা।
আমার বাড়ি বৈদ্যবাটীর এনসি ব্যানার্জি রোডে। জিটি রোডের ধারে আমার একটা গয়নার দোকান আছে। গত বছর ওই দোকানেই তালা ভেঙে সর্বস্ব লুট করেছিল দুষ্কৃতীরা। তারপর থেকে দোকানে কিছু রেখে আসতাম না। মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম।
বাড়ির কাছে একটা গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিল তিনজন। অন্ধকারে বুঝতে পারিনি। হঠাৎই ঝাঁপিয়ে পড়ল ওরা। একটি ছেলে আমার ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করল। আমি ছাড়িনি। পিছন থেকে আর একজন আমার মাথায় শক্ত কিছু দিয়ে মারে। দেখি হাতে রিভলভার জাতীয় একটা অস্ত্র। তারই বাঁট দিয়ে মারছে আমার মাথায়। কিন্তু ওরা বোধ খুব পাকা ছিনতাইবাজ নয়। সিনেমার মতো একঘায়ে কাবু করতে পারেনি আমাকে। তাই একের পর এক আঘাত করেছে আমার মাথায়। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়েছি, তবু শেষ চেষ্টা করেছিলাম। ব্যাগে প্রায় এক লাখ টাকার সোনা, কিছু টাকা ছিল। গত বছর ডাকাতির পর ওইটুকুই সব ছিল। খুব কষ্ট করে ব্যবসাটা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলাম। পুজোর মুখে তাও নিয়ে গেল। এ গত এক-দেড় বছরে একের পর এক ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা শুনেছি। আমার নিজেরই দু’বার হয়ে গেল। আমার তো মনে হয় চন্দননগর কমিশনারেট হওয়ার পর থেকে যেন আর বেড়েছে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। পুলিশ কী করছে আমি জানি না। আমার তো সর্বনাশ হয়ে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy