—প্রতীকী ছবি।
শ্রীরামপুরের পরে এ বার কোন্নগর।
ফের হুগলিতে দুষ্কৃতী-তাণ্ডব। ফের গুলি। মারধর। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মাসদেড়েক আগে তারকেশ্বরে হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো কমিশনারেট তৈরিও হয়েছে। কিন্তু হুগলিতে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবে লাগাম পরেনি।
কিছুদিন আগে শ্রীরামপুর ও বৈদ্যবাটিতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক জন খুন হন এবং এক জন জখম হন। তার পরে বৃহস্পতিবার রাতে দুষ্কৃতীদের এলাকা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে কোন্নগরের কাঁসারিপুকুর এলাকায় গুলি চলল। মারধর করা হয় স্থানীয় একটি ক্লাবের ছেলেদের। তাঁদের মধ্যে টিঙ্কু দে সরকার-সহ পাঁচ জন রক্তাক্ত হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। একটি গুলি এক তরুণের পা ছুঁয়ে চলে যায়। কোনওক্রমে তিনি প্রাণে বাঁচেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনটি মোটরবাইকে অন্তত ৮ দুষ্কৃতী বাইরে থেকে হাজির হয়। ঘটনার প্রতিবাদে ওই রাতেই এলাকার মহিলা ও পুরুষেরা রাস্তায় নামেন। কোন্নগর ফাঁড়ি ও উত্তরপাড়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রাতে কারা এসেছিল পুলিশ তাদের কয়েকটি নাম জেনেছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজের কয়েকটি খোল পেয়েছে।’’
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা মাঝেমধ্যেই এলাকায় চড়াও হয়। পুলিশকে জানানো হলেও স্থায়ী সমাধান হয় না। কিছুদিন উৎপাত কমে, এই যা। অথচ, কোন্নগরে জিটি রোডে একটি বড় পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানান, হুগলি শিল্পাঞ্চলের ‘ত্রাস’ বর্তমানে জেলবন্দি রমেশ মাহাতোর দলবল মাঝেমধ্যেই ওই এলাকায় শক্তি প্রদর্শন করতে হানা দেয়। ওই রাতে কাঁসারিপুকুরের কিছু ছেলেকে ছেলেকে নিজেদের দলে নিতে রমেশের ছেলেরা টোপ ফেলেছিল। এ নিয়েই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে তাল ঠোকাঠুকিতেই এলাকা তপ্ত হয়ে ওঠে।
এক সময় কাঁসারিপুকুর এলাকায় শান্ত নামে এক দুষ্কৃতী মাথাচাড়া দিয়েছিল। কিন্তু দুষ্কৃতীদের নিজেদের মধ্যে বিবাদের জেরে ওই এলাকায় শান্তর বাড়িতেও চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। ভাঙচুর চালানো হয় তার বাড়িতে। এরপর অবশ্য ওই দুষ্কৃতী খুন হয়।
পুলিশের দাবি, কাঁসারিপুকুরের কিছু ছেলের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের যোগায়োগ রয়েছে। তাদের আবার স্থানীয় কয়েকটি বাড়ির মহিলারা মদত দেন। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে বাইরের ছেলেদের মদ আর জুয়ার আসর বসেছিল পাড়ায়। তারপর গুলি চলে। মারধর হয়। পুলিশেরই তো অসামাজিক কাজ বন্ধ করার দায়িত্ব।
দু’দল দুষ্কৃতীর লড়াই হুগলিতে অবশ্য এই প্রথম নয়। কমিশনারেট হওয়ার আগে বলাগড়ে রাস্তার মধ্যে ওই লড়াইয়ে গুলিতে নিহত হয়েছিল এক দুষ্কৃতী। আহত হয় তিন জন। কমিশনারেট হওয়ার পরে সেই লড়াইয়ের ছবি এ বার কোন্নগরে।
তাই কমিশনারেট গড়ে লাভ কী হল, প্রশ্ন তুলছেন কোন্নগরের বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy