শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে চলতি বছরের গোড়া থেকে গ্রামোন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে উদয়নারায়ণপুরের কানুপাট-মনসুকা গ্রাম পঞ্চায়েতে। বরাদ্দ টাকা এসে পড়ে রয়েছে। অথচ, না হচ্ছে রাস্তা সংস্কার, না হচ্ছে ১০০ দিন প্রকল্পের কাজ, না হচ্ছে চুল্লি তৈরি। ফলে, ভুগতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। অবিলম্বে তাঁরা গ্রামোন্নয়নের কাজে পঞ্চায়েতকে সক্রিয় হওয়ার দাবি তুলেছেন।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন প্রধান অজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘কোনও বৈঠক হচ্ছে না। ফলে, সব প্রকল্প আটকে রয়েছে। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। কবে, সমস্যা মিটবে জানি না।’’ এ নিয়ে বিডিও সুরজিৎ ঘোষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ওই পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের সব ক’টিই তৃণমূলের। দলেরই একটি সূত্রের দাবি, এলাকার আধিপত্য ধরে রাখার জন্য প্রধানের সঙ্গে ওই এলাকা থেকে জয়ী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রাজু ছড়ির বিরোধের জেরেই এই অচলাবস্থা। পঞ্চায়েতের সদস্যেরাও দু’দলে ভাগ হয়ে গিয়েছেন। ফলে, পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মনসুকা এলাকায় শ্মশানে একটি চুল্লি তৈরিকে কেন্দ্র করে সমস্যার সূত্রপাত। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে দু’লক্ষ টাকায় চুল্লিটি তৈরির পরিকল্পনা হয় ২০১৩ সালে। অভিযোগ, প্রধানের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেরা সেটি করতে দিতে রাজি হননি। এ ছাড়াও পঞ্চায়তের সশক্তিকরণ প্রকল্পে (আইএসজিপি) ২০ লক্ষ টাকা, এবং তৃতীয় ও ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন খাতে ১০ লক্ষ টাকা এসে পড়ে রয়েছে। কানুপাট পঞ্চায়েত অফিস থেকে মনসুকা হাইস্কুল পর্যন্ত একটি ইটের রাস্তার কিছু অংশের সংস্কার ও কিছু জায়গায় ইট বসানোর কাজ হচ্ছে না। ফলে, ছাত্রছাত্রী-সহ এলাকার লোকেদের সমস্যা হচ্ছে। এমন থমকে থাকা কাজের উদাহরণ আরও রয়েছে।
রাজুবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা শঙ্কর চৌধুরী দাবি করেন, চুল্লির কথা পঞ্চায়েতের বৈঠকে তাঁদের জানানো হয়নি। তাঁদের না জানিয়েই প্রধানের গোষ্ঠী কাজ করতে চাইছে। ফলে, পরবর্তী বৈঠকে ও দলগত আলোচনার পরেই সেই কাজ হবে। অন্যান্য কাজ নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে অজয়-গোষ্ঠীর দাবি, চুল্লিটি ২০১৩ সালের প্রকল্প। ফলে, নতুন করে সেটি আর জানানোর দরকার হয় না। পরবর্তী বৈঠকে সমস্ত বিষয়টি আলোচনার কথা থাকলেও সেই বৈঠক হয়নি। প্রধানের তরফে চারটি বৈঠক ডাকা হলেও শঙ্কর-গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত সদস্যেরা বৈঠকে আসেননি। ফলে, উপ-সমিতির বৈঠক কোনও প্রকল্প পাশ হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে রাজুবাবুর দাবি, ‘‘সমস্যা একটা ছিল। তা মিটে গিয়েছে। সমস্যাটি চুল্লি তৈরি সংক্রান্ত বিষয়ে নয়। প্রধান নিজের ইচ্ছামতো এলাকায় কাজ করাতে চাইছিলেন। কিন্তু অনেক সদস্য চাইছিলেন, সব বুথে সমান ভাবে কাজ করা হোক।’’ উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা দাবি করেছেন, ‘‘ওখানে যে সমস্যা ছিল, সেটা মিটিয়ে দিয়েছি। সকলে মিলে এক সঙ্গেই কাজ করছেন।’’
কিন্তু এখনও সেই কাজের কোনও নমুনা দেখতে পাননি গ্রামবাসীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy