উড়ালপুল সংলগ্ন ভাগাড়ের স্তূপীকৃত আবর্জনা। আর জমে থাকা এই আবর্জনায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে আশপাশ এলাকার মানুষের জনজীবন।
চন্দননগর রেলস্টেশন সংলগ্ন কলুপুকুর এলাকায় উড়ালপুলের দু’ধার ঘেঁষে পাহাড় সমান উঁচু হয়ে রয়েছে নানা ধরনের বর্জ্য থেকে মৃত জীবজন্তুর পচাগলা দেহ। শহরের মানুষের ফেলে দেওয়া নোংরা ও বর্জ্য পদার্থগুলি পুরকর্মীরা সংগ্রহ করে পুরসভার এই ভাগাড়ে জমা করেন। মাঝে মধ্যেই আবর্জনার স্তূপে আগুন লেগে যায়। এই ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মক দূষিত হয়।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে এই ভাগাড়ের আর্বজনা থেকে সার তৈরি হতো। ফলে ময়লা স্তূপীকৃত হওয়ার আগেই সরিয়ে ফেলা হত। বর্তমানে সার তৈরির যন্ত্রপাতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় ওই প্রকল্প প্রায় বন্ধ। ফলে আর্বজনা জমতে জমতে পাহাড় হয়ে গিয়েছে। ভাগাড় এলাকার আশপাশেই ঘন বসতি রয়েছে। ওই সব এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার মানুষের বাস।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্তূপীকৃত ওই আবর্জনার দুর্গন্ধে ও দূষণে অনেকে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তা ছাড়া দুর্গন্ধের জন্য তাঁরা ঘরের জানালা খুলতে পারেন না। আত্মীয়স্বজন বাড়িতে আসাও বন্ধ করেছে। একদিকে ভাগাড়ের আবর্জনার দুর্গন্ধ এবং অন্যদিকে আগুন লেগে দূষিত ধোঁয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বহুবার পুরকর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য দরবার করা হলেও পরিস্থিতি বদলায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সেখ রুস্তম বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরেই এই জায়গায় ভাগাড় রয়েছে। সারা শহরের বর্জ্য পদার্থ ছাড়াও মৃত জীবজন্তুর পচা-গলা দেহ থেকে যে দুর্গন্ধ বের হয় তাতে বাড়ির বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আগে এই ময়লা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো। এখন তা না হওয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।’’
পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যের সমস্ত শহরের বর্জ্য একটি বিশেষ জায়গায় জমা করে পরে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তা নষ্ট করা হয়। চন্দননগর ভাগাড়ে আগে সেই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্বজনা সরিয়ে ফেলা হতো। বর্তমানে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে এলাকার পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে, তেমনই আবার এলাকাবাসী নানা রোগের শিকার হচ্ছেন। অবিলম্বে পুরসভার এই সমস্যার সমাধান করা উচিত।’’
চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সম্প্রতি ওই এলাকায় উড়ালপুলের কাজের জন্য ভাগাড়ের ময়লা দিয়ে সার তৈরির প্রকল্প বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে ওই প্রকল্প ফের চালু করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দূষণ এড়াতে সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy