Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাক-চালক খুন, রসিদের সূত্রে গ্রেফতার খালাসি

বুধবার সকালে চণ্ডীতলার রাস্তার ধারে পড়ে থাকা ক্ষতবিক্ষত এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর জামার পকেট থেকে ডানকুনি টোলপ্লাজার একটি রসিদ পেয়েছিল পুলিশ। সেই রসিদের সূত্রেই ওই ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হল। দেখা গেল, নিহত দয়াল মাঝি গোপ (৫০) ট্রাক চালক। ধৃত রাজেশ সাউ ওই ট্রাকের খালাসি। বিকেলে নিশ্চিন্দায় গিয়ে পুলিশ ট্রাকটির হদিশ পায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০১:৩৫
Share: Save:

বুধবার সকালে চণ্ডীতলার রাস্তার ধারে পড়ে থাকা ক্ষতবিক্ষত এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর জামার পকেট থেকে ডানকুনি টোলপ্লাজার একটি রসিদ পেয়েছিল পুলিশ। সেই রসিদের সূত্রেই ওই ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হল। দেখা গেল, নিহত দয়াল মাঝি গোপ (৫০) ট্রাক চালক। ধৃত রাজেশ সাউ ওই ট্রাকের খালাসি। বিকেলে নিশ্চিন্দায় গিয়ে পুলিশ ট্রাকটির হদিশ পায়।

পুলিশের দাবি, জেরায় খুনের কথা কবুল করে ধৃত জানিয়েছে, গালিগালাজ করাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে এবং কাঁচির আঘাতে ওই ব্যক্তিকে খুন করে। ধৃতকে আজ, বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দয়ালবাবুর বাড়ি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বড়গড়িয়া গ্রামে। রাজেশ বোকারোর বাসিন্দা। মঙ্গলবার ওই দু’জন বোকারো থেকে ট্রাকে কাজু এবং বিস্কুট নিয়ে লিলুয়ায় আসেন। সেখানে মাল খালাস করেন। এর পরে খালি ট্রাক নিয়ে বালি নিশ্চিন্দায় আসছিলেন। তখন ট্রাক চালাচ্ছিল রাজেশ। সেই সময় ট্রাকটি একটি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। কারও কোনও ক্ষতি না হলেও দয়ালবাবু এ জন্য রাজেশকে গালিগালাজ করেন। এর পরে দু’জনে নিশ্চিন্দায় একটি হোটেলে খাওয়া-দাওয়া সারেন।

পুলিশের কাছে রাজেশ দাবি করে, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হোটেলে খেয়ে ট্রাকে গিয়ে শুয়ে পড়েন দয়ালবাবু। গালিগালাজ করার জন্য তাঁর উপরে রাজেশের রাগ জন্মেছিল। দয়ালবাবুকে ঘুমোতে দেখে তখনই ট্রাক থেকে লোহার রড বের করে রাজেশ তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রডের আঘাতে দয়ালের মাথা থেঁতলে দেয় সে। তার পরে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গাড়িতে থাকা কাঁচি নিয়ে তাঁর বা’কান কেটে ফেলে। পেটের ভিতরেও কাঁচি ঢুকিয়ে দেয়। এর পরে ডানকুনি হয়ে চণ্ডীতলার কলাছড়ার কাছে অহল্যাবাঈ রোডের ধারে দেহ ফেলে দিয়ে যায়।

সকালে দেহটি উদ্ধারের পরে চণ্ডীতলার ওসি তাপস সিংহ টোলপ্লাজায় যায়। তদন্তকারীরা জানান, টোলপ্লাজার সিসিটিভি-র ফুটেজে দেখা যায়, ওই টিকিটে থাকা নম্বরের ট্রাক মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই প্লাজা দিয়ে কলকাতার দিকে গিয়েছে। তখন ট্রাক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিহতের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। ট্রাকের মালিকের সঙ্গেও যোগাযোগ করে পুলিশ। ট্রাক-মালিক তাঁদের জানান, হাওড়া বা হুগলির কোনও জায়গায় ট্রাকটি আছে। বিকেলে নিশ্চিন্দায় গিয়ে পুলিশ ট্রাকটির হদিশ পায়। ট্রাকের মধ্যে রক্তের দাগ দেখতে পায় তারা। পাশেই একটি হোটেল থেকে ধরা হয় রাজেশকে।

তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার বলেন, “ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে রাতেই দেহ চণ্ডীতলায় ফেলে দিয়ে নিশ্চিন্দায় ফিরে যায় রাজেশ। সেখানকার হোটেলে আরাম করেই সারাটা দিন কাটিয়ে দেয়। তবে আর কিছুটা দেরি হলেই সে গাড়ি নিয়ে চম্পট দিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chanditala murder southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE