মগরার একটি মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।
কোথাও মাথা তুলেছে প্যারিসের অপেরা হাউস। কোথাও ৩৫ ফুট লম্বা ঘোড়ায় টানা রথ। সূর্যমুখী ফুলের বাহার দেখার মতো। বীণাপাণির আরাধনাকে কেন্দ্র করে সেজে উঠেছে মগরা। মণ্ডপ আলো প্রতিমার বৈচিত্র্যে হুগলির এই জনপদ এখন সরস্বতীময়।
হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার মগরা স্টেশনে নামলেই চোখে পড়বে আলোর রোশনাই। জিটি রোডের দু’ধারে রয়েছে একের পর এক মণ্ডপ। মগরা থানার অর্ন্তগত বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০টি পুজো হয়। চার দিন ধরে চলে। চোখধাঁধানো মণ্ডপের সঙ্গে চন্দননগরের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে গোটা শহর। দর্শনার্থীর ভিড়ে যাতে কোনও অশান্তি না ঘটে, তার জন্য শহর ঘিরে পুলিশি ব্যবস্থাও থাকছে আটোসাঁটো।
এ বার ঐক্য সম্মিলনী ক্লাবের পুজোয় কল্পনায় উঠে এসেছে স্বর্গ-নরকের পরিবেশ। বাঘাটি বন্ধুমহলের পুজো এ বার ৪৪ বছরে পড়ল। মণ্ডপ হয়েছে ইসকনের সূর্য মন্দিরের আদলে। জঙ্গলপাড়া শ্রী সঙ্ঘের মণ্ডপে যাবতীয় কারিকুরি নিয়ে হাজির কার্টুন চরিত্র ছোটা ভীম, আলিবাবা। বান্ধব সন্মিলনীর ৯৫ বছরের পুজোয় দেখা যাবে ৩৫ ফুট লম্বা ঘোড়ায় টানা রথ। জয়পুর সবুজ সঙ্ঘের পুজোতেও জাঁজ়কজমকের অভাব নেই। প্যারিসের অপেরা হাউসের আদলে তৈরি মণ্ডপ দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পুজো ৮১ বছরে পড়ল। কয়েক লক্ষ বোতাম দিয়ে নেতাজি সঙ্ঘের মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে রামায়ণের কাহিনি। ইউনাইটেড ক্লাবের পুজোর আলো চোখধাঁধানো। সাকার্সের জিমন্যাস্টিকের খেলা থেকে অলিম্পিক বল হাজির আলোর জাদুতে। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে সূর্যমুখী ফুলের আদলে। অগ্রগামী সঙ্ঘে দেখা যাবে চিড়িয়াখানার জন্তু-জানোয়ার। সবই মডেলে। নিপুণ কাঠের কাজের বৈচিত্র্য চোখে পড়বে প্রিয়া সমিতির পুজোয়। নতুনগ্রাম নেতাজি সঙ্ঘের থিম ‘দর্পণে মা সরস্বতী’। প্রায় সব মণ্ডপেই এমন হরেক নতুনত্ব।
পুজোর চার দিন শহর যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে তার জন্য চুঁচুড়া-মগরা পঞ্চায়েত সমিতির ২০০ জন শ্রমিককে কাজে লাগানো হয়েছে। বিশেষ আলোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকটি রাস্তায় স্বাস্থ্য দফতরের ক্যাম্প থাকছে। তা ছাড়া, মগরা থানা এবং পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্সও শহরে ঘুরে বেড়াবে বলে জানানো হয়েছে। শহরের রাস্তাঘাট সংকীর্ণ হওয়ার ফলে পুজোর দিনগুলিতে অগ্নিসংযোগ মোকাবিলার জন্য দমকলের ছোট ইঞ্জিনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, শহরের মাঝখানে যেহেতু জি টি রোড, তাই পুজোর দিনগুলিতে যান নিয়ন্ত্রণ হবে। বিকেল থেকে পরের দিন সকাল জি টি রোডে মালবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। দর্শনার্থীর সুবিধার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৮টি সহায়তা-কেন্দ্র করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy