Advertisement
E-Paper

নৌ-শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বলাগড় চায় সরকারি সাহায্য

গভীর সঙ্কটে বলাগড়ের নৌ-শিল্পীরা। বর্তমানে ফাইবারের নৌকা বাজারে আসায় কাঠের তৈরি নৌকার কদর ক্রমশ কমে যাচ্ছে। ফলে তাঁদের দরও কমে গিয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার থেকেও তাদের সাহায্য করা হচ্ছে না বলে নৌকাশিল্পীদের অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০১:৩১
এই নৌকাই পাড়ি দেবে রাজ্যের সর্বত্র। ছবি: তাপস ঘোষ।

এই নৌকাই পাড়ি দেবে রাজ্যের সর্বত্র। ছবি: তাপস ঘোষ।

গভীর সঙ্কটে বলাগড়ের নৌ-শিল্পীরা। বর্তমানে ফাইবারের নৌকা বাজারে আসায় কাঠের তৈরি নৌকার কদর ক্রমশ কমে যাচ্ছে। ফলে তাঁদের দরও কমে গিয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার থেকেও তাদের সাহায্য করা হচ্ছে না বলে নৌকাশিল্পীদের অভিযোগ। তাই সমস্যায় পড়ছে নৌ-শিল্পীরা।

নৌ-শিল্প বলাগড় অঞ্চলে এক ঐতিীহ্যবাহী শিল্প ছিল। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে এই শিল্প বিলুপ্তির পথে এগোচ্ছে। বর্ষার সময় নৌকা তৈরির মাত্রা একটু বাড়লেও অন্য সময় তা দেখা যায় না। তাঁদের অভিযোগ, ব্যবসার ক্ষেত্রে তাঁরা কোনও ব্যাঙ্ক থেকে ঋন পায় না। তার ফলে নৌব্যবসায়ীদের যাঁর যা পঁুজি থাকে তাই দিয়ে কোনওরকমে ব্যাবসা চলছে। কাঁচামালেরও অভাব দেখা দিয়েছে। এর জন্যও নৌকা উত্‌পাদন ব্যহত হচ্ছে। কাজের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা এই এলাকায় কাজ ছেড়ে সমুদ্র উপকূল অঞ্চলের নৌকা তৈরির কারখানায় যোগ দিচ্ছেন। তার ফলে এই কারখানা গুলি না চলার একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে শ্রমিক সমস্যা।

হুগলির বলাগড়ের শ্রীপুর ও তেঁতুলিয়া গঙ্গা উপকূলবর্তী এলাকায় প্রায় ৩০০টি পরিবার এই নৌশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এই এলাকার তৈরি হওয়া নৌকা আগে এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হত। ঠিক তেমনই রাজ্যের বাইরে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড প্রভৃতি জায়গায় প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ হত। তাছাড়া আগে শাল, সেগুন কাঠ দিয়ে শক্তপোক্ত কাঠের নৌকা তৈরি করা হত। এখন এই সব কাঠের আকাশছোঁয়া দাম হয়ে যাওয়ায় খরচও পোশাতে পারছেন না নৌশিল্পীরা। তাই তাঁরা নৌকা তৈরিতে ব্যবহার করছেন বাবলা, শিরিস এবং হার্ডউড কাঠ দিয়ে। কিন্তু এই কাঠগুলিও যথাযথ না পাওয়া যাওয়ায় এদিকেও তাঁরা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। আর যে সমস্ত শ্রমিকেরা অন্যত্র যেতে পারছেন না তাঁরা পরিবার বাঁচাতে এলাকায় এলাকায় ১০০ দিনের কাজে দিনমজুরের কাজ করছেন। কেউ আবার চাষের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

মাছ ধরার ক্ষেত্রে ছোট নৌকার চাহিদা বেশি। এই নৌকা তারি করতে খরচ পড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। নৌকা তৈরির অন্য সামগ্রী পাওয়া গেলেও কাঠ পাওয়া যাচ্ছ না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তারমধ্য গাছ কাটা এখন দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই গাছ কেটে কাঠ জোগাড় করার সময় পুলিশ ধরছে বেলও তাঁরা জানান।

বলাগড়ের শ্রীপুরের বাসিন্দা এক নৌশিল্পী শেখ কুতুবুদ্দীন, বিশ্বনাথ মাঝিরা বলেন, “আমি এই নৌশিল্পের সঙ্গে ১৬ বছর ধরে যুক্ত। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে এই নৌশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এমনকী এই কাজ করে ভাল মুনাফার আশা করাও যায় না। তাপ উপর কাঁচামাল এবং শ্রমিক সমস্যা তো লেগেই আছে। সরকারের থেকেও কোনও সাহায্য পাওয়া যায় না। এইভাবে চলতে থাকলে নৌশিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা মৃত্যুর পথ বেছে নিতে বাধ্য হবে।”

এ প্রসঙ্গে বলাগড়ের বিডিও রঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, “নৌশিল্পীরা আমাদের কাছে এখনও আসেনি। এই সমস্যা নিয়ে যদি তাঁরা আমাদের কাছে আসেন। তাহলে এই শিল্পকে বাঁচানোর জন্য সরকার থেকে নিশ্চই কোনও না কোনও বাবস্থা করবে। আমারা রাজ্য প্রশাসনকে বিষয়টি জানাবো।”

southbengal boat industry balagarh need government aid
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy