Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
গোঘাট-১: চরম ভোগান্তি যাত্রীদের

রাস্তা না সারানোয় তিনদিন ধরে বাস বন্ধ

বার বার দাবি জানালেও মেরামত হয়নি রাস্তা। যার ফলে যাত্রী ভোগান্তির পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছিল বাসের যন্ত্রাংশেরও। এর প্রতিবাদে অবিলম্বে রাস্তা সারানোর দাবিতে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাস মালিকেরা। গোঘাট ১ ব্লকে দামোদরপুর থেকে আরামবাগের কালিপুর পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার ওই রাস্তায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোঘাট শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৯
Share: Save:

বার বার দাবি জানালেও মেরামত হয়নি রাস্তা। যার ফলে যাত্রী ভোগান্তির পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছিল বাসের যন্ত্রাংশেরও। এর প্রতিবাদে অবিলম্বে রাস্তা সারানোর দাবিতে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাস মালিকেরা। গোঘাট ১ ব্লকে দামোদরপুর থেকে আরামবাগের কালিপুর পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার ওই রাস্তায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তা সারানোয় প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলে ওই রুটের বাসমালিক সংগঠনের সম্পাদক অভয়কুমার বিট বলেন, “রাস্তা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বছর পাঁচেক ধরে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের ওই রাস্তা মেরামতির দাবি তুলে মাঝেমধ্যেই বাস চলাচল বন্ধ রাখা হতো। কিন্তু তাতেও প্রশাসনের হুঁশ না ফেরায় বাধ্য হয়ে এই উপায় নিতে হয়েছে। বিষয়টি মহকুমা শাসক সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরে জানিয়ে দিয়েছি।”

রাস্তার ভগ্নদশার কথা স্বীকার করে মহকুমা শাসক প্রতুলকুমার বসু বলেন, “বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে।” হুগলি জেলা পরিষদের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার উপলকুমার হাজরার বক্তব্য, দামোদরপুর রাস্তাটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ক ওর্ডারও দিয়ে দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনকে মিটিং করে দ্রুত কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।

ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, রাস্তা সারানো নিয়ে বৃহস্পতিবারই বৈঠক হয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যেই মেরামতির কাজ শুরু হবে। বাস মালিকদের বাস চালাতে অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও বাস মালিকরা ব্লক প্রশাসনকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, রাস্তা সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হলে তবেই তাঁরা বাস চালানো শুরু করবেন। কারণ, আগেও অনেকবার প্রতিশ্রতি পাওয়া গেলেও কাজ হয়নি। যদিও স্থানীয়ভাবে রাস্তাটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। আগে আরামবাগ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে যাতায়াত চলত মূলত ক্ষীরপাই হয়ে। গাড়িতে সময় লাগত প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা। অথচ দামোদরপুর হয়ে যেতে সময় লাগে মাত্র দেড় ঘণ্টা। ওই রুটে বর্তমানে তারকেশ্বর, আরামবাগ, হাওড়া যাতায়াতের জন্য ১৬টি বাস চলে। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে অফিসের নিত্যযাত্রী সকলেই।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগের কালিপুর থেকে গোঘাটের দামোদরপুর পর্যন্ত সরু গ্রামীণ রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় নির্মাণের অনুমোদন পায় ২০০৩ সালে। কাজ শেষ হয় ২০০৬ সালের ১ জুন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, তৈরির পর দু’বছর যেতে না যেতেই রাস্তা ভেঙেচুরে যায়। ২০১১ সাল থেকেই যা একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পিচের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব নেই। গোটা রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ। কোথাও কোথাও গর্ত এতটাই গভীর যে বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রতি বর্ষায় রাস্তা সারানোর দাবিতে একবার করে বাস বন্ধ রাখার জেরে রাস্তায় মাঝেমধ্যে স্থানীয়ভাবে পঞ্চায়েত সমিতি ইট-পাথর ফেলে গর্ত বোজালেও মাস খানেক পরে ফের একই অবস্থা।

নিয়মানুযায়ী প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির পরে নির্মাণকারী সংস্থা পরবর্তী পাঁচ বছর তার রক্ষণাবেক্ষণ করবে। তার পর থেকে রাজ্য সরকারের তরফে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের ওই রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা। সেই হিসাবে ২০১১ সাল থেকে রাস্তাটি সংস্কারের কথা জেলা পরিষদের। কিন্তু জেলা পরিষদ রাস্তা সংস্কার নিয়ে উদাসীন বলে অভিযোগ যাত্রী থেকে যানচালক, বাস মালিক সকলের। তৃণমূল পরিচালিত গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণাল আলু বলেন, “রাস্তার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ছাড়া উপায় নেই। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে এ জন্য ১০ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার প্রকল্প পাঠানো হয়েছে জেলা পরিষদে। অথচ পাওয়া যাচ্ছে ১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। ওই টাকায় জোড়াতালি দেওয়া ছাড়া কিছুই হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

goghat road southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE