Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
BJP

KMC Polls 2021: চাপ নিয়ে লাভ কী! পদ্মের পুরভোট প্রস্তুতি যেন ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ দশায়

২০১৫ সালে ৭, ২২, ২৩, ৪২, ৭০, ৮৬, এবং ৮৭ ওয়ার্ডে জয় পায় বিজেপি। যার মধ্যে ৭ এবং ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পরে তৃণমূলে যোগ দেন।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়ে বিজেপি-র ‘ধীরে চলো’ নীতি। নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়ে বিজেপি-র ‘ধীরে চলো’ নীতি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ১৩:৫৫
Share: Save:

১৯ ডিসেম্বর কলকাতায় পুরভোট। ১ ডিসেম্বর, মানে আগামী বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তার আগে শনিবার দুপুর পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোনও আলোচনাতেই বসেননি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার দুপুরেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বামেরা। রাতে শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি শিবিরে এখনও কোনও উত্তাপ নেই। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দিল্লি থেকে ফিরে নিজের লোকসভা এলাকা বালুরঘাটে। রবিবার তিনি কলকাতায় আসতে পারেন। আবার সোমবার লোকসভার অধিবেশনে যোগ দিতে তাঁর দিল্লি চলে যাওয়ার কথা। সে দিন সংসদে সম্ভবত কৃষি আইন সংশোধন সংক্রান্ত বিল আসতে চলেছে। তার জন্য ‘থ্রি লাইন হুইপ’ জারি করেছে বিজেপি। ফলে দলের লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরভোটকে যেন ‘লড়তে হয় তাই লড়া‍’ হিসেবে নিয়েছে বিজেপি।

কবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে আনন্দবাজার অনলাইনকে সুকান্ত টেলিফোনে বলেন, ‘‘রবিবার আমি কলকাতায় যাব। তবে প্রার্থী তালিকা রবিবারেই চূড়ান্ত করা যাবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না। সোমবার প্রকাশ করার চেষ্টা করা হবে।’’ বুধবার যেখানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন, সেখানে সোমবার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা কি অনেকটা দেরি হয়ে যাবে না? সুকান্ত জবাবে বলেন, ‘‘আচমকা ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় আমরা এখনও সব চূড়ান্ত করে উঠতে পারিনি। আমরা গোটা রাজ্যে একসঙ্গে পুর নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু শুধু কলকাতার জন্য যে ভাবে একতরফা নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে, তাতে তো শাসকের উদ্দেশ্য স্পষ্ট।’’

বিজেপি শিবির সূত্রে খবর, দলের কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার নেতাদের প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেই তালিকা শনিবারের মধ্যে রাজ্যের কাছে জমা পড়বে। রাজ্য নেতৃত্ব তা বিবেচনা করবে রবিবার। সুকান্ত কলকাতায় এলে সেই তালিকায় শিলমোহর দেবেন এবং তার পরেই ঘোষণার কথা ভাবা হবে। কিন্তু দল যে কলকাতা পুরভোটকে সে ভাবে গুরুত্ব দিতে চাইছে না, সেটা আ়ড়ালে স্বীকার করছেন রাজ্য নেতারাও। গেরুয়া শিবিরের এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পরে এখন যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে কলকাতায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন। কর্মীদের মনোবলও তলানিতে। তাই পুরভোটে শক্তির অপচয় করে কোনও লাভ হবে না বুঝেই খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যে সব ওয়ার্ডে শক্তি রয়েছে, সেখানেই লড়াইয়ের কথা ভাবছে দল। সর্বত্র মিছিমিছি লড়াই করার কোনও মানেই হয় না।’’

২০১৫ সালে ৭, ২২, ২৩, ৪২, ৭০ ৮৬, এবং ৮৭ ওয়ার্ডে জয় পায় বিজেপি। যার মধ্যে ৭ এবং ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপি ঘোষ ও অসীম বসু পরে তৃণমূলে যোগ দেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রিঙ্কু নস্কর বিজেপি-তে যোগ দেন। সেই হিসেবে এখন বিজেপি-র হাতে ছ‍’টি ওয়ার্ড। সম্প্রতি এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৮৬ নম্বরের কাউন্সিলর তিস্তা বিশ্বাসের। সেখানে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র টিকিটে অতীতে পাঁচ বার করে জিতেছেন যথাক্রমে মীনাদেবী পুরোহিত এবং সুনিতা ঝাওয়ার। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে গত দুই পুরসভা নির্বাচনে জিতেছেন বিজয় ওঝা। বিজেপি সূত্রে খবর, রিঙ্কু, মীনাদেবী, সুনিতা এবং বিজয়ের নামই এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত। বাকি ওয়ার্ডের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠক হতে পারে রবিবার।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়ে বিজেপি-র ‘ধীরে চলো’ নীতির পিছনে আরও একটা কারণ গেরুয়া শিবির এখনও কলকাতা হাই কোর্টের দিকে তাকিয়ে। রাজ্যের সমস্ত পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও শুধুমাত্র কলকাতা এবং হাওড়ায় পুরভোট করানোর কথা কেন ভাবছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন, এই প্রশ্ন তুলে আগেই আদালতে গিয়েছে বিজেপি। দাবি তুলেছে সর্বত্র একসঙ্গে ভোট করানো হোক। গত বুধবার সেই মামলার শুনানি শেষে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি আদালত। জানিয়েছে, পরবর্তী শুনানি হবে আগামী সোমবার। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে কমিশন। পুরভোটের ভবিষ্যৎ আদালতে বিচারাধীন থাকলেও এই ঘোষণাকে এক তরফা বলে মনে করছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আদালতের অবস্থান আমাদের কাছে দুর্বোধ্য লাগছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার আদালত কী বলে, আমরা তার জন্য অপেক্ষা করব।’’ আদালতের দিকে যে বিজেপি তাকিয়ে রয়েছে তার ইঙ্গিত রয়েছে সুকান্তর কথাতেও। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার আদালত কী বলে দেখার পরেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে তার আগেই তা তৈরি হয়ে যাবে।’’ তিনিই কি ঘোষণা করবেন? জবাবে সুকান্ত বলেন, ‘‘হুইপ থাকলে লোকসভায় যেতেই হয়। সে ক্ষেত্রে আমার বদলে অন্য কেউ ঘোষণা করে দেবেন। আমি সম্ভবত সোমবার দিল্লি যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Kolkata Municipal Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE