ধৃতদের এক জনকে তোলা হচ্ছে কোর্টে।—নিজস্ব চিত্র।
মেঘালয়ের জঙ্গি সন্দেহে দুই যুবককে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
পুলিশি সূত্রের খবর, অ্যালবার্ট জারোয়া এবং অমর সিংহ নামে ওই দুই যুবক দক্ষিণ কলকাতার মুকুন্দপুরের একটি গেস্ট হাউসে উঠেছিল। কয়েক দিন আগে মেঘালয় পুলিশ ছবি পাঠিয়ে দু’জনকে খুঁজে দেওয়ার জন্য লালবাজারকে অনুরোধ করেছিল। শনিবার রাতে তারা ধরা পড়ে। ওই গেস্ট হাউসে উত্তর-পূর্বের অনেক তরুণ-তরুণী থাকেন। ধৃত দুই যুবকের কাছে কোনও পরিচয়পত্রও ছিল না। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, তোলাবাজি করতেই তারা শহরে এসেছিল।
এসটিএফের খবর, ধৃত দু’জন জয়ন্তিয়া প্রদেশের ‘হাইনিট্রেপ ন্যাশনাল লিবারেশন কাউন্সিল’ (এইচএনএলসি) জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। জয়ন্তিয়ার খাসি-গারো সম্প্রদায়ের মানুষের ‘স্বাধীনতা’র জন্য লড়াই করে জঙ্গি সংগঠনটি। পুলিশের বক্তব্য, ওই গোষ্ঠীর জঙ্গিরা মেঘালয়ে ও উত্তর-পূর্বের অন্য রাজ্যে পরিচিত মুখ। তাই সেখানে লুকিয়ে থাকলে ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা। তাই তারা ভিড় জমাচ্ছে কলকাতা ও শহরতলিতে। পড়াশোনা বা চাকরির জন্য উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেকেই এ শহরে থাকেন। পুলিশের সন্দেহ, তারই সুযোগ নিয়ে কলকাতায় ঢুকছে জঙ্গিরা।
পূর্ব খাসি হিলের এসপি এম খারক্রাং জানান, এইচএনএলসি নেতা পিরনাই সয়েরের দলে কাজ করত অ্যালবার্ট, অমর। দু’জনই শিলং-এর লাইটুমখ্রার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজ, নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ, তোলাবাজির অভিযোগ আছে। কিছু দিন আগে পিরনাই কলকাতায় ধরা পড়ে। সম্প্রতি মেঘালয় পুলিশ জানতে পারে, ওই দুই জঙ্গি কলকাতার আশেপাশে রয়েছে।
১৯৯২ সালে তৈরি এইচএনএলসি মেঘালয়ের প্রথম জঙ্গি সংগঠন। রাজ্যে সক্রিয় ১০টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে একমাত্র তারাই খাসি পাহাড়ের সংগঠন। ২০০০ সাল থেকে সংগঠনটি নিষিদ্ধ। ২০০৫ সালে তারা শান্তি আলোচনার ডাক পাঠালেও, কেন্দ্র সাড়া দেয়নি। ২০০৭-এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জুলিয়াস ডরফাং আত্মসমর্পণ করেন। তাঁকে খুন করতে গিয়ে সংঘর্ষে নিহত হয় ৫ জঙ্গি। এখন ডরফাং মাওহাতির নির্দল বিধায়ক।
এইচএনএলসি-র অন্য নেতারা অবশ্য এখন বাংলাদেশে বসে সংগঠন চালাচ্ছে। চলছে তোলাবাজি, অপহরণ। গোয়েন্দাদের দাবি, নাগাল্যান্ডের এনএসসিএন (আইএম), ত্রিপুরার এনএলএফটি এবং পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সঙ্গে ওই সংগঠনের সম্পর্ক রয়েছে। অন্য সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য তাদের পছন্দের জায়গা হল কলকাতা বা ঢাকা। আইএসআইয়ের ইশারায় মেঘালয় হয়ে জাল ভারতীয় টাকা ছড়ানোর অভিযোগও রয়েছে এইচএনএলসির বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy